৬ দিনেও মেয়ের করোনা টেস্টের রিপোর্ট পাননি আজিজুল
Published : Saturday, 25 April, 2020 at 3:41 PM Count : 493
নমুনা সংগ্রহের ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও ১৮ বছর বয়সী মেয়ের করোনা টেস্টের রিপোর্ট পাননি লালমনিরহাটের আজিজুল। ফলে অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
আজিজুলের মেয়ে এজমার রোগী এবং তিনি সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
আজিজুল জানান, তাঁর মেয়ে আগে থেকেই এজমার রোগী। গত রবিবার (১৯ এপ্রিল) শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে ওই দিনই লালমনিরহাট জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মেয়েকে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার শ্বাসকষ্ট দেখে প্রথমেই করোনা টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান এবং করোনার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বাড়িতে থেকে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে বলেন। এরপর ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও রিপোর্ট না আসায় আজিজুলের মেয়ের চিকিৎসা শুরু করা যায়নি।
এদিকে গত দুইদিন ধরে আজিজুলের মেয়ের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েন তিনি। বাধ্য হয়েই সিভিল সার্জন ও হাসপাতালের ডাক্তারদের শরনাপন্ন হন। আজিজুলের অভিযোগ ডাক্তার তাঁর মেয়েকে করোনা ওয়ার্ডে ভর্তির পরামর্শ দেন।
তবে বিষয়টি আস্বীকার করেছেন লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ দোলন। তিনি বলেন, প্রথমে আমরা একজন রোগীর মধ্যে করোনার কোনো লক্ষণ যেমন, জ্বর, গলা ব্যাথা, শ্বাসকষ্ট আছে কিনা তা পরীক্ষা করি। পরে রোগীর মধ্যে নূন্যতম লক্ষণ দেখা দিলে নিরাপত্তার স্বার্থে তার শরীরের তাপমাত্রা, সাম্প্রতিক ভ্রমণ বা বাইরে থেকে আসা কারো সংস্পর্শে এসেছেন কিনা তার রেকর্ড নিয়ে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা হয়। প্রয়োজনে রোগীর করোনা টেস্টের জন্য নমুণা সংগ্রহ করে রংপুর মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। তারপর টেস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা হয়। ওই রোগীকে বাড়িতে নয়, রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়ায় সন্দেহভাজন রোগী হিসেবে আমরা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু তাতে তারা রাজি হননি।
এ ব্যপারে লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন বলেন, এখন পর্যন্ত লালমনিরহাট জেলা থেকে মোট ১২৭ টি নমুনা সংগ্রহ করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে ৮৫ টি নমুণার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। সেখানে প্রতিদিন গড়ে ৯২ টি নমুণা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়। একদিনে সর্বোচ্চ ১৮৫ টি পরীক্ষা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত কিট ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনা থাকলে দ্রুত রিপোর্ট দেয়া সম্ভব হয়। কিন্তু প্রতিদিন গোটা বিভাগের ৮ টির জেলার কয়েক শত নমুণা পরীক্ষার জন্য আনা হয়। ফলে নমুণা সংগ্রহের কয়েকদিন পরেও অনেক সময় রিপোর্ট পাওয়া সম্ভব হয় না।
তিনি আরও জানান, করোনা টেস্ট বাড়াতে ও সংকট কাটাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দিনাজপুর ও বগুড়ায় দু’টি করোনা টেস্টের ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যা গত সপ্তাহে চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ অবধি তা স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। তবে কি কারনে তা সম্ভব হয়নি সে ব্যাপারে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে চলতি সপ্তাহেই ল্যাবগুলো চালু হওয়ার ব্যাপারে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
এমএস/এসআর