গোলায় ধান তোলার স্বপ্ন কৃষাণ-কৃষাণীর
Published : Sunday, 5 April, 2020 at 4:40 PM Count : 439
সোনালী হয়ে উঠছে সবুজ হাওড়। সোনা ধানে ভরে উঠছে অবারিত মাঠ। কৃষাণ কৃষাণীর চোখে মুখে এখন কেবলই ধান গোলায় তোলার স্বপ্ন।
ধানের দাম পাওয়া আর প্রকৃতির বিরূপ আচরণ নিয়ে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ থাকলেও মহামারি করোনা আতঙ্কের মাঝেই হাওড়ের সোনালী ধান কাটা শুরু করেছেন নেত্রকোণার খালিয়াজুরী কৃষকরা। কৃষি সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে সরকারের উদারনীতির কারণে ধান কাটার কর্মযজ্ঞ চালছে নির্বিঘ্নেই।
খালিয়াজুরীতে মোট চাষযোগ্য কৃষি জমির পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার হেক্টর। যার মধ্যে এবার ধান রোপণ করা হয় ১৯ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। গেল বছর ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াসহ শ্রমিকের চড়া মূল্য ও উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার ধান চাষে অনেক কৃষক অনাগ্রহী হয়ে উঠেন। যার ফলে উপজেলাব্যাপী প্রায় এক হাজার হেক্টর জমি পতিত রয়ে যায়। তবে উপজেলার কৃষি অফিসের সহযোগীতা ও সরকারের প্রাণোদনা পেলে এ অনাবাদি জমির পরিমাণ অনেক কমানো যেত বলে অনেক কৃষকের ভাষ্য।
উপজেলা কৃষি অফিসার আহসান হাবিব জানান, এ বছর ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৮ হাজার ৯২৫ মে. টন। ফসলের অবস্থা ভালো। বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। কিছু জমি পতিত থাকা স্বত্বেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণে খুব একটা সমস্যা হবে না। করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখেই কৃষকের পাশে থাকার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ছায়ার হাওড়ের কৃষক মোতালিব মিয়া জানান, ধানের ফলন ভালো হয়েছে, এখন কেবল ঘরে তোলা। তবে ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে কৃষক চাপে রয়েছে।
সদর ইউনিয়নের বাল্যার হাওড়ের সুধির বৈষ্ণব বলেন, খরা, বায়ুদুষণ, অকাল বন্যা, শিলাবৃষ্টি অনেক অনিশ্চয়তা মাথায় নিয়ে আমরা ফসল ফলাই। তারপরও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার শঙ্কাতো থাকেই। দাম না পেলে আর ধান ফলাব না।
একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক বিঘা (৪০ শতাংশ) জমিতে ধান চাষ করে ঘরে তোলা পর্যন্ত খরচ হয় প্রায় ১০ হাজার টাকা। সর্বোচ্চ ফলন পেলে ধান পাওয়া যায় ২৫ মণ। বৈশাখ মাসে যার স্থানীয় বাজার মূল্য ৫০০ টাকা মণ ধরে ১২ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু মণ প্রতি ৮শ থেকে এক হাজার টাকা পেলে কৃষকের অনেক লাভ না হলেও অন্তত দাম নিয়ে অভিযোগ থাকতো না।
যেহেতু হাওড়ের জমিগুলো এক ফসলি। শুধুমাত্র ধান নির্ভর। তাই ধানের মূল্য ও কৃষি ভর্তুকি বাড়িয়ে দিলে কৃষি ও কৃষক দুটোকেই বাঁচানো সম্ভভ বলে মত দিয়েছেন হাওড়ের বিশিষ্টজনরা।
-আইএইচ/এমএ