করোনায় আতংকিত না হওয়ার অনুরোধ রাষ্ট্রদূতের |
![]() বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই অনুরোধ জানান। সৌদি আরবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১শ ৬৫ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৮ শ ৮৫ জন। মারা গেছেন ৫ জন, এই নিয়ে মোট মারা গেছেন ২১ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৪ জন, সর্বমোট সুস্থ হয়েছেন ৩২৮ জন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে রিয়াদে ৭ জন, মক্কায় ৪৮ জন, মদিনায় ৪৬ জন, জেদ্দায় ৩০ জন, দাম্মামে ৪ জন, কাতিফে ৫ জন, আল-খোবারে একজন, আল খাবজিতে ৯ জন, দাহারানে ৪ জন, খামিজ মোশায়েতে ৬ জন, আবহায় দু'জন, বিসায় একজন, আহাদ রাফিদায় একজন, রাস্তানুরায় একজন। এখন পর্যন্ত করোনায় ৩ বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর জানিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস ও কনস্যুলেট। তাদের মধ্যে মদিনায় একজন চিকিৎসক, একজন কোম্পানী ড্রাইভার আরেকজন বিক্রয়কর্মী। এদিকে, রিয়াদে মার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫২ বছর বয়সী একজন হাউজ ড্রাইভার। বৃহস্পতিবার থেকে পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনায় ২৪ ঘন্টা কারফিউ জারি করা হয়েছে। যা পূর্বে ছিল বিকেল ৩টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত। রাজধানী রিয়াদসহ অন্যান্য শহরে এখন পর্যন্ত পূর্বের সময় বলবৎ রয়েছে । এ সময় এই দুই নগরীতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে বের হওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। তবে, একান্ত জরুরী চিকিৎসা সেবা ও জরুরী খাদ্যদ্রব্য কেনাকাটা ও জরুরী ব্যাংকিং সেবার জন্য যার যার নির্দিষ্ট বসতি এলাকার ভেতরে অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিতভাবে বের হওয়া যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত বয়স্করা বের হতে পারবেন। বের হতে হলে প্রতি গাড়িতে ড্রাইভারসহ আরেকজন অর্থাৎ মাত্র দু'জন থাকতে হবে। শুধুমাত্র গ্রোসারি শপ/তামউইনাত, ফার্মেসী, ফিলিং স্টেশন ও ব্যাংক ছাড়া সকল প্রকার ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে। কারফিউ আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে মর্মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। একই ভাবে ইতোপূর্বে যাদেরকে কাজের স্বার্থে কারফিউর আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল তারা এসব এলাকায় অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত ভাবে চলাফেরা করতে পারবে। এই নির্দেশনা জনস্বার্থ বিবেচনায় জারি করা হয়েছে। সৌদি পাবলিক সিকিউরিটি অথরিটি জানিয়েছে, লকডাউন এবং কারফিউর মধ্যে যদি কেউ এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে যাওয়া জরুরী গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন তাহলে তাদের পরিচয়, ফোন নাম্বার ও কেন যাওয়া প্রয়োজন তার বিস্তারিত উল্লেখ করে ইমেইল ([email protected]) করতে হবে। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে তার যাওয়ার অনুমতি প্রদান করবে। তবে ইমেইল যেন শুধু অতীব জরুরী বিষয়েই হয়। অন্যদিকে, রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, যাদের জরুরি ভিত্তিতে মেডিকেলে যাওয়া প্রয়োজন হবে (এ্যাম্বুলেন্স সুবিধা ছাড়া) তারা যেন রেড ক্রিসেন্টের নম্বরে ৯৯৭ কল করে। প্রয়োজন অনুযায়ী রেড ক্রিসেন্ট তাকে শুধুমাত্র হাসপাতালে যাওয়ার উদ্দেশ্যে জরুরী অনুমতির একটি এসএমএস মোবাইলে পাঠাবে। মোবাইলে এসএমএস পাওয়ার পর শুধুমাত্র হাসপাতালে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হওয়া যাবে। এই সুবিধার অপব্যবহারে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। তবে কোন অবস্থাতেই যেন কেউ অনুমতি ছাড়া ঘর থেকে বের না হয়। সকলের মনে রাখা দরকার এই কারফিউ এবং লকডাউন আপনার, আমার স্বাস্থ্যের নিরাপত্তার জন্য। সৌদি আরবে বাংলাদেশি প্রবাসীদের যেকোন প্রয়োজনে রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের টোল ফ্রি হটলাইন ৮০০১০০০১২৫, জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ৮০০২৪৪০০৫১ নম্বরে ফোন করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথাসহ সাস্থ্যগত বেশি সমস্যা হলে সৌদি সাস্থ্যসেবা ৯৩৭ নম্বরে ফোন করে দ্রুত সেবা নেয়ারও অনুরোধ জানানো হয়। এর আগে গত ৩১ মার্চ সৌদি আরবে বসবাসরত সৌদি নাগরিক, বৈধ ও অবৈধ সকল প্রবাসীর করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা বিনামূল্যে প্রদানের জন্য বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ এক রাজকীয় ফরমান জারি করেন। সৌদি হজ মন্ত্রণালয় হজ চুক্তি সম্পাদনে ধৈর্য্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছে। কারণ, আগে করোনা মহামারি থেকে মানুষকে রক্ষা করা জরুরি। রাজকীয় সৌদি সরকার মানুষের নিরাপত্তার জন্য সম্ভব সব কিছু করবে। হজমন্ত্রী বলেন, যারা ওমরাহ পালনের ফি প্রদান করেছেন তাদের সেই ফি ফিরিয়ে দিতে সৌদি আরব প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। -এসসি/এমএ |