অবস্থায় সীমিত আকারেও খোলা রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক। তবে একান্তই জরুরি ছাড়া কেউ-ই আসছেন না। যারাও আসছেন তাদের নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেই লেনদেন সম্পন্ন করে দ্রত ব্যাংক ত্যাগ করতে দেখা গেছে।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার শহরের ব্যাংকপাড়া খ্যাত এসএস সড়কের কয়েকটি ব্যাংকের শাখা ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।
একই চিত্র দেখা গেছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক, ঢাকা, সোনালী, রূপালী, জনতা, অগ্রণী ও ডাচবাংলা ব্যাংকেও।
সরেজমিন দেখা গেছে, সরকারি ব্যাংকগুলোর তুলনায় বেসরকারি ব্যাংকের শাখাগুলোতে গ্রাহকের উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি। জরুরি প্রয়োজনে খোলা রাখা প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাই টাকা জমা দিতে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে আসছেন। আবার দু’একজন এসেছেন রেমিটেন্সের টাকা তুলতে। ব্যাংক গুলোতে গ্রাহকের সংখ্যা খুবই কম যার কারনে লেনদেনও কম। তবে প্রত্যেক ব্যাংকেই সেনিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে করনীয় বিষয়ে সতর্ককতামূলক নোটিশ টানিয়ে দেয়া হয়েছে।
এসএস সড়কের ন্যাশনাল ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় গিয়ে দেখা যায়, হাতে গোনা কয়েকজন গ্রাহক কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। সেখানেও রয়েছে দূরত্ব! সবারই নিজ নিজ সাধ্য অনুযায়ী রয়েছে সুরক্ষা সামগ্রী। কারও মুখে মাস্ক, অনেকের হাতে গ্ল্যাভস।
সেখানে কথা হয় শহরের মুজিব সড়কের বাসিন্দা গৌরসাহা নামের এক গ্রাহকের সঙ্গে। তিনি বলেন, মানুষ এখন অনেক সচেতন। টাকার জরুরি প্রয়োজন না হলে কেউ ব্যাংকে আসছেন না। আমি টাকা তুলে বাজার করবো, তাই এসেছি। না হলে আমিও আসতাম না। আমি আর সাতদিন ব্যাংকে আসবো না।
ইসলামী ব্যাংক শাখায় কথা হয় সদর উপজেলার তেলকুপি গ্রামের শাহ আলমের সাথে তিনি বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে ব্যাংকে টাকা উঠানো এবং ডিপিএস’র টাকা জমা দেয়ার জন্য এসে ছিলাম। অন্যান্য সময়ে খুব ভীর থাকে এখন ব্যাংকে লোক নাই বললেই চলে তাই কাজ সারতে সময় লাগছে না।
এ বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংকের সহকারি মহাব্যবস্থাপক এবং প্রধান শাখা ব্যবস্থাপক ফরিদুল হক বলেন, এ অবস্থায় সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত লেনদেন করা হচ্ছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গ্রাহকের সংখ্যা খুবই কম। নিত্য প্রয়োজনে যাদের টাকা দরকার তারাই টাকা তুলতে আসছেন। মূলত এ সময়ে জরুরি প্রয়োজনেই ব্যাংকে সেবা নিতে আসছেন গ্রাহকেরা। আমরা চেষ্টা করছি, সাধ্যের মধ্যে তাদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার।
তবে তিনি বলেন, সীমিত আকারে সেবা দেয়া হলেও ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। কেননা কে কোন ভাবে আসছেন এছাড়া বিদেশ ফেরতরা ব্যাংকে আসছেন কিনা তাও জানা যাচ্ছে না। এভাবেই আমাদের সেবা দিতে হচ্ছে।
ইসলামী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ বলেন, গ্রাহকের উপস্থিতিও যে খুব কম তা নয়। অনেকে প্রয়োজনে আসছেন টাকা উঠাতে আবার দু’একজন এসেছেন রেমিটেন্সের টাকা তুলতে।
ন্যাশনাল ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক রাকিব উদ্দিন বলেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গ্রাহক ও লেনদেন অনেক কমে গেছে। কিছু গ্রাহক নিতান্তই প্রয়োজন ছাড়া ব্যাংকে খুব একটা আসছেন না। এছাড়া ব্যাংকগুলোর অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম), ক্যাশ ডিপোজিট মেশিন (সিডিএম), ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) চালু রাখা হয়েছে। এটিএম থেকে তোলা যাচ্ছে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে দিনে এক হাজার টাকা ক্যাশআউট ফ্রি করা হয়েছে। তাই টাকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুবিধা থাকায় গ্রাহকরা বেশী প্রয়োজন ছাড়া ব্যাংকে আসছেন না।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সরকারি ধারণ ছুটির সময় কাঁচাবাজার খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল এবং জরুরি সেবার পাশাপাশি ব্যাংকিং সেবার সময় সূচিও পরিবর্তন করা হয়েছে। সাধারণ ছুটির এ সময়ে ব্যাংকগুলো খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে দুপুরে দেড়টা পর্যন্ত। লেনদেন করা যাবে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত।
এবি/এসআর