নজিপুর মহিলা মাদ্রাসার বর্জ্য পুকুরে, জনজীবন অতিষ্ঠ
Published : Monday, 2 March, 2020 at 4:15 PM Count : 519
নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা সদরের নজিপুর পৌরসভা এলাকার কলোনীপাড়ায় অবস্থিত আল জামিয়াতুল ইসলামীয়া "খাতুনে জান্নাত" ক্বওমী মহিলা মাদ্রাসা। প্রতিষ্ঠানটির পয়ঃনিষ্কাষনের সংযোগ দেয়া হয়েছে পার্শ্ববর্তী পুকুরে। এর ফলে দুর্গন্ধে ওই মহল্লার জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, নজিপুর কলোনীপাড়ায় অবস্থিত ওই মহিলা মাদ্রাসার ৩তলা ভবনের হোস্টেলে ছাত্রী সংখ্যা ৫ শতাধিক। মাদ্রাসার টয়লেটের বর্জ্যের পাইপলাইনটি পুকুরে সংযোগ দেয়ায় এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে পোকামাকড় ও মশা-মাছি বংশ বিস্তার করছে।
ওই মহল্লার ভুক্তভোগী আব্দুর রহমান বলেন, 'দীর্ঘ দিন ধরে আমরা এই দুর্ভোগ সহ্য করছি। বিষয়টি একাধিক বার মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের নিকট জানিয়েও কোন সমাধান হয়নি।'
ভুক্তভোগী বৃদ্ধ মো. জবেদ আলী (৭০) বলেন, 'আমি অসুস্থ মানুষ। সব সময় বাড়িতেই থাকি। ওই মাদ্রাসার বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পুকুরে ফেলার কারণে পোকা ও মশার জন্ম হয়। এ জন্য দিন-রাত সব সময় মশারির ভেতর থাকতে হয়।'
মহল্লার আরেক বাসিন্দা এ জেড মিজান বলেন, 'প্রথম শ্রেণির পৌরসভাতে আমরা বসবাস করি ভাবতেই অবাক লাগে। পয়ঃনিষ্কাশন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যাটি সমাধানে পৌর কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।'
মোসা. সুমানা খাতুন, মোসা. হীরা বিবি, মোসা. মঞ্জুআরা, মোসা. নূরী বেগম আক্ষেপ করে বলেন, আমরা এখানে অনেক অসহায় হয়ে পড়েছি। আমাদের বাসার সামনে এই দুর্গন্ধ ও পচা পানিতে পুকুরটি এখন দূষিত। যা পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরুপ।
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মো. মুসা বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, শুধু মহল্লাবাসী না আমরাও এমন অবস্থায় কষ্টে আছি।
তিনি আরও বলেন, 'মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানটি বেসরকারি। তাই আমরাও সমস্যা সমাধানে নিরুপায়। সমস্যাটি সমাধানকল্পে নজিপুর পৌর কর্তৃপক্ষের নিকট বার বার আবেদন জানিয়েও কোন কাজ হয়নি।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নজিপুর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আব্দুল মজিদ বলেন, 'সমস্যাটি এখন বর্তমানে পরিবেশের ওপর চরম আকার ধারণ করেছে। ওই মাদ্রাসার আবাসিকে ৫ শতাধিক ছাত্রী অবস্থান করে। মাদ্রাসাটিও দান ও অনুদানে পরিচালিত হয়ে থাকে। প্রতিনিয়ত টয়লেটের বর্জ্য ও মলমুত্র মাদ্রাসার সংলগ্ন একটি পুকুরে গিয়ে পড়ে। এতে মহল্লাবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, 'সমস্যা সমাধানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে আত্রাই নদীতে ফেলা ছাড়া উপায় নেই। তবে বর্তমানে এমন মোটা অংকের কাজের জন্য পৌরসভার তহবিলে কোন বরাদ্দ নেই। তাই বিষয়টি স্থানীয় সাংসদ সদস্য মো. শহীদুজ্জামান সরকারকে অবহিত করা হয়েছে।'
নজিপুর পৌরসভার মেয়র মো. রেজাউল করিব চৌধুরী বলেন, 'সমস্যাটি সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)'র কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবির বলেন, 'পরিবেশের ওপর তথা আবাসিক এলাকার জনজীবন দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ। তাই এমন ঘটনায় পৌরসভার দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।'
-এমএ