সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ২৬৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশির ভাগেরি নেই কোন শহীদ মিনার। মহান বিজয় দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ওইসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে শ্রদ্ধা জানায়। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শহীদ মিনার না থাকায় পার্শ্ববর্তী শহীদ মিনারে সম্মিলিত ভাবে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।
জানা গেছে, বিগত বছরগুলোতে এ দিবসে দেয়াড়ার কাশিয়াডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দুই মাইল পায়ে হেঁটে দেয়াড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। এমন দৃশ্য উপজেলায় অনেক বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাতেও। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৩৭টি মাদ্রাসায় নেই শহীদ মিনার। পৌরসভাসহ ও উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে শহীদ মিনার রয়েছে মাত্র ২৬টি। এর মধ্যে কলারোয়া ফুটবল ময়দানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, কলারোয়া সরকারি কলেজ, শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রী কলেজ, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ, কলারোয়া সরকারি প্রাইমারি স্কুল, গোপীনাথপুর সরকারি প্রাইমারি স্কুল নিয়ে ৬টি শহীদ মিনার রয়েছে কলারোয়া পৌরসভার মধ্যে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্মিত শহীদ মিনারগুলো হলো- হেলাতলা ইউনিয়নের দমদম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হেলাতলা আইডিয়াল হাইস্কুল, কাজীরহাট হাইস্কুল, ঝাঁপাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জয়নগর ইউনিয়নের সরসকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জয়নগর বদরুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয় ও ধানদিয়া হাইস্কুল, দেয়াড়া ইউনিয়নের খোরদো হাইস্কুল, কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের পানিকাউরিয়া হাইস্কুল, কেরালকাতা ইউনিয়নের কেকেইপি হাইস্কুল, চন্দনপুর ইউনিয়নের গয়ড়া বাজার, চন্দনপুর ইউনাইটেড কলেজ, বয়ারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চান্দুড়িয়া কেসিজি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হিজলদি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের সোনাবাড়িয়া সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বিবিআরএনএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের বোয়ালিয়া প্রাইমারি স্কুল-হাইস্কুল-কলেজের যৌথ, লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের কেএল হাইস্কুল ও সিংগা হাইস্কুল প্রাঙ্গণ।
স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও শহীদ মিনার স্থাপনের তেমন কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। শুধু ফেরুয়ারী মাস এলেই বিষয়টি সামনে আসে।
সূত্র জানায়, উপজেলায় ৩৭টি মাদ্রাসা রয়েছে। যার মধ্যে ৫টি সিনিয়র মাদ্রাসা। এসব মাদ্রাসার কোথাও শহীদ মিনার তৈরীর উদ্যোগ নেয়া হয়নি। উপজেলার ১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। অপরদিকে উপজেলার ১২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে ১২টিতে। উপজেলার ১২টি বেসরকারি কলেজের মধ্যে ৭টি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্মাণ করা হয়নি শহীদ মিনার।
কলারোয়া সরকারি কলেজ, শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রী কলেজ, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ, বোয়ালিয়া মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রি কলেজ ও চন্দনপুর ইউনাইটেড কলেজ ক্যাম্পাসে কেবলমাত্র শহীদ মিনার রয়েছে। নতুন প্রজন্মের অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসে শহীদ মিনার দেখতে পায় না।
কলারোয়া মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল হামিদ জানান, ৩ বছর পূর্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকৌশল অধিদপ্তরে তালিকা পাঠিয়েছি। কিন্তু এখনো কোন সাড়া পাইনি।
কলারোয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাফফর হোসেন জানান, উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ জানান, শীঘ্রই শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
-জেএ/এমএ