সাভারে দম ফেলানোর ফুরসত নেই ফুল চাষীদের
Published : Thursday, 13 February, 2020 at 6:51 PM Count : 542
রাত পোহালেই প্রকৃতিতে নেমে আসবে ফাল্গুন, তার সঙ্গে তাল মিলিয়েছে বিশ্ব ভালবাসা দিবস। এ ছাড়া কয়েদিন পরেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালীর এই তিন দিবস উদযাপনে ফুলের বিকল্প নেই। তাই ফেব্রুয়ারিতে ফুলের চাহিদা থাকে ব্যাপক হারে। দিবসগুলোকে সামনে রেখে ফুলের চাহিদা মেটাতে রাত-দিন এককার করে কাজ করছেন ফুল চাষীরা। উপজেলার বিরুলিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৩শ' ফুল চাষী এবার তিন কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করেছেন। যা গত বারে তুলনায় কম।
সরেজমিনে ফুল উৎপাদন ও ফুল বিক্রি দেখতে মঙ্গলবার বিকালে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের শ্যামপুর, কমলাপুর, বাগ্মীবাড়ি ও সাদুল্লাহপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে ফুল চাষীদের ব্যস্ততা লক্ষ্য করা গেছে। দিবসগুলোর সময় ঘনিয়ে আসায় চাষীদের ফুল বাগান পরিচর্যা ও ফুল তুলে বিক্রি করার তোরজোড় বেড়ছে। সেই সাথে দর্শনার্থীদের আনাগোনাও অন্য সকল দিনের তুলনায় বাড়তি। যেন দম ফেলানোর ফুরসত নেই তাদের।
বিরুলিয়া ইউনিয়নের আইঠর গ্রামের ফুল চাষী আশরাফ মিয়া বলেন, ৭-৮ বছর পূর্বে ভারত থেকে বিদেশী জারবেরা ফুলের চারা এনে বাগান করেছেন তিনি। ব্যবসায়িক ভাবে লাভবান হওয়ায় এখন তিনি ফুল চাষে জমির পরিমাণ বাড়িয়েছেন। ফুল চাষকে কেন্দ্র করে বছরে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ২৫-৩০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়ে থাকে। আর এই মৌসুমেই কেবল সাভার থেকেই প্রায় ৩ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়ে থাকে।
দুই বিঘা জমিতে প্রায় ১২ বছর যাবৎ গোলাপ চাষ করেন আলমগীর। সারাবছর তেমন ফুল বিক্রি না হলেও ফেব্রুয়ারি মাস ফুল বিক্রীর জন্য বাণিজ্যিক মাস দাবি করে তিনি বলেন। এ মাসের শুরু থেকেই আমরা গোলাপ গাছের পরিচর্যা করতে থাকি। ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালবাসা দিবসের আগে আমরা ফুলগুলো বিক্রির চেষ্টা করি। সারাবছর ফুল বিক্রি করে যা রোজগার হয়। তার চেয়ে তিনগুণ বেশি বিক্রয় হয় এই ফেব্রুয়ারি মাসে। এ মাসে ভালবাসা দিবস ও ২১ শে ফেব্রুয়ারী থাকায় বিশেষ করে গোলাপ ফুলের চাহিদা বেশী থাকে।
প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ফুল প্রেমী হাজারো দর্শনার্থী এসব ফুলের বাগনে ভীর করেন। এসময় তারা ফুলের সুভাষে হারিয়ে গিয়ে ক্যামেরায় ছবি তুলতে এবং ফুল দিয়ে নিজেদেরকে সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অধিক পরিমানে দর্শনার্থী গোলাপ বাগানে আসায় এখান থেকেই ফুল বিক্রী করে ভালো আয় করে থাকেন ফুল চাষীরা।
বর্তমানে স্যামপুর ও মৈস্তাপাড়া বাজারে ফুল বিক্রি হচ্ছে প্রতিপিস গোলাপ ফুল ১০ থেকে ১৫ টাকা, প্রতি পিস মাম ফুল ৫ টাকা, জিপসি ফুল বান্ডেল ৫০০ টাকা, গ্লাডিওলাস রঙ ভেদে ১০০ ফুল ১২শ' থেকে ১৩শ' টাকা, কেলেন্ডার এক বান্ডেল ৭শ' টাকা, জারবেরা ফুল ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে।
সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিয়াত আহম্মেদ বলেন, এবার সাভারের বিরুলিয়া ও তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নে চাষীরা প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ করেছেন। ভালো ফুল উৎপাদন ও তা বাজারজাতকরণে চাষীদের পর্যাপ্ত সহযগীতা করা হচ্ছে। এছাড়া ফুল ব্যবসায়ী ও চাষীদের দাবি ফুল সংরক্ষণ ও তা বিদেশে রপ্তানীর ব্যাপারে সরকারি ভাবে শীঘ্রই উদ্যোগ করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
ওএফ/এসআর