For English Version
মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪
হোম

রাজশাহীতে চালের বাজারে অস্থিরতা

Published : Saturday, 25 January, 2020 at 8:36 PM Count : 775

হঠাৎ করেই অস্থির হয়ে উঠেছে রাজশাহীর চালের বাজার। গত সপ্তাহ থেকেই রাজশাহীর পাইকারী বাজারে হঠাৎ করেই চালের দাম বেড়েছে। এখন ধীরে ধীরে খুচরা বাজারেও চালের দাম বাড়ছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা।

খুচরা বাজারের বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারী আড়ৎ থেকে চাল কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে।

তারা আরও বলছেন, মিলারদের কারসাজিতেই বাজারে চালের দাম বাড়ছে। দু’মাস আগেও চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছিল। তখন সরকার ও মিলারদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠকের পর দাম কমে আসে। কিছু দিন নিশ্চুপ থাকার পর চালের দাম বাড়াতে মিলাররা আবারও তৎপর হয়ে ওঠেছে। সম্প্রতি ধানের দাম বাড়ার অজুহাতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম বাড়ানো হয়েছে ১০০-২০০ টাকা। বাধ্য হয়ে তাদেরও দাম বাড়াতে হচ্ছে।

মহানগরীর কাদিরগঞ্জ ও সাহেব বাজার চালপট্টির পাইকারী আড়তগুলো ঘুরে জানা যায়, গত সপ্তাহ ধরে চালের দাম বাড়ছে। বর্তমানে এক বস্তা (৫০ কেজি) আটাশ ধানের চাল ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া পারিজা ২ হাজার ৮০০, স্বর্ণা ২ হাজার ৫০০, মিনিকেট ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ৫০ কেজির বাসমতি চালের বস্তা ২ হাজার ৭০০ এবং নতুন আতব ৪ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও ৮৪ কেজির আটাশ চালের বস্তা ৩ হাজার ১০০ থেকে ৩ হাজার ১৫০ টাকা, পারিজা ২ হাজার ৫০০, স্বর্ণা ২ হাজারর ৩০০, মিনিকেট ৩ হাজার ৩০০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ এবং বাসমতি চালের ৫০ কেজির বস্তা ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।

শনিবার সকালে মহানগরীর সাহেব বাজার চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারী বাজারে চালের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে খুচরা বাজারেও কোন কোন দোকানে কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা দাম বেড়েছে।

এপি চাল ভাণ্ডারে সকালে আটাশ ৩৮ থেকে ৪২ টাকা, মিনিকেট ৪৬ থেকে ৫০, স্বর্ণা ৩২ থেকে ৩৫, গুটি স্বর্ণা ৩০, জিরাশাল ৪৫ থেকে ৪৮, সিদ্ধ পাইজাম ৫০ এবং বাসমতি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। দোকানে এমন মূল্য তালিকা টাঙানো ছিলো।

তবে এই বাজারেই একই নামের চালগুলো অন্য কয়েকটি দোকানে কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা যায়।

এপি চাল ভাণ্ডারের বিক্রেতা মিলন প্রসাদ বলেন, তারা এক সপ্তাহ আগে কেনা চাল বিক্রি করছেন। সে জন্য দাম বাড়ানো হয়নি। কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যে যারা চাল কিনেছেন তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বিষয়টি স্বীকার করেন সুবল চাল ভাণ্ডারের বিক্রেতা আবদুল করিম। তিনি বলেন, আমরা ৩-৪ দিন আগে চাল এনেছি। পাইকারী বাজারে চালের দাম বেড়েছে। সে অনুযায়ী আমাদেরও কেজি প্রতি দাম কিছুটা বাড়াতে হয়েছে।

এদিকে, চালের দাম বৃদ্ধিতে খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ বিপাকে পড়েছেন।

চাল কিনতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আফসার হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, হঠাৎ করে চালের দাম বাড়া অযৌক্তিক। কারণ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম যেন আর না বাড়ে সে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। পাশাপাশি কেন দাম বাড়লো সেটাও তদন্ত করে দেখা দরকার। সে জন্য বিশেষ ভাবে বাজার মনিটরিং করতে হবে।

দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে পাইকারী চালের আড়ৎ কাদিরগঞ্জ এলাকার সততা এন্টার প্রাইজের ব্যবস্থাপক শাহজাহান আলী বলেন, আমরা কমিশনে চাল বিক্রি করি। মিলার চাল এনে দেয়ার পর বলে দেন, এই চাল এই দামে বিক্রি করতে হবে। সে অনুযায়ীই আমাদের বিক্রি করতে হয়। তারপর টাকা বুঝিয়ে দিলে আমাদের কমিশন দেয়া হয়। দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমাদের কোন ভূমিকা নেই। এটা মিলাররাই করেন।

একই কথা বলেন সাব্বির রাইস এজেন্সির ব্যবস্থাপক গোলাম রাব্বানী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবার আমন মৌসুমে কৃষকরা জরুরি প্রয়োজন মেটাতে কম দামে ধান বিক্রি করেছেন। এখন কৃষকের ঘরে তেমন ধান নেই। বরং কৃষকের ঘরের ধান এখন মিল মালিকদের কাছে মজুদ রয়েছে। আর কৃষকের ঘরে ধান ফুরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই বাজারে ধানের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ফলে কৃষকের লাভ এখন ভোগ করছে মিল মালিকরা।

তবে মিলাররা বলছেন, বাজারে ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং সরকারি আমন সংগ্রহ অভিযান শুরু হওয়ায় বেড়েছে চালের দাম। তাছাড়া খাদ্য বিভাগে চাল সরবরাহ করতে মিল মালিকরাও বাজারে ধান কেনার প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। এ কারণে বাজারে ধানের দাম বেড়ে গেছে। বর্তমানে বাজারে ধানের দাম অনেক বেশি। তারপরও ধান পাওয়া যাচ্ছে না। আর বেশি দামে ধান কেনায় চালের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। ফলে চালের দামও বাড়ছে।

চালের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের রাজশাহী জেলার সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ জানান, হঠাৎ করে চালের দাম বেড়েছে বলে তিনিও শুনেছেন। রাজশাহীর মিল থেকে শুরু করে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিশেষ ভাবে মনিটরিং করা হবে। অসাধু উপায়ে দাম বাড়ালে ভোক্তা আইনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

-আরএইচএফ/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,   [ABOUT US]     [CONTACT US]   [AD RATE]   Developed & Maintenance by i2soft