ত্রিপুরায় বাউল উৎসব রোববার |
আবহমান বাংলার সংস্কৃতির অহংকার বাউল উৎসব। অসাম্প্রদায়িক চেতনার সম্প্রীতির সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে লালন সংস্কৃতি। বাংলার এ সংস্কৃতি ধারণ করে আছেন দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বাঙালিরা। যার মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিম বাংলা, ত্রিপুরা এবং আসাম। যেখানে বাংলা ভাষা প্রধান এবং দাপ্তরিক। আবহমান বাংলার হারানো ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাউল উৎসব। আগামী রোববার (২৯ ডিসেম্বর) ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ১ নং হলে এ বাউল উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের উদ্যোগে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। বাউল উৎসবে সংগীত পরিবেশন করবেন, বাংলাদেশের খ্যাতিমান বাউল সম্রাট ওস্তাদ শফি মন্ডল, সৈয়দ আশিকুর রহমান (আশিক), লালন কন্যা নাসরিন আক্তার বিউটি এবং জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী ইদ্রিস আনোয়ার (পরান)। ত্রিপুরাস্থ আগরতলা বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার কিরীটি চাকমা এ তথ্য জানিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবতাবাদী আদর্শকে স্মরণ করে তিনি বলেন, পৃথিবীর বুকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বহু ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, পেশা ও আদর্শের সম্ভাবনাময় এক বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশে সব ধমের্র মানুষ একসঙ্গে, এক চেতনার অধীনে কাঁধ মিলিয়ে বাস করে। সে চেতনা হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনা। যখন গোধূলি নামে তখন একইসঙ্গে মসজিদ থেকে আজানের ধ্বনি এবং শাঁখের ধ্বনি জানান দেয় যে, আমরা মহান বাঙালি জাতি। আমাদের মধ্যে কোন বৈষম্য নেই, নেই কোন সাম্প্রদায়িক আদর্শ। সেই জন্মলগ্ন থেকেই আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনার ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ’ নামেই পরিচিত বিশ্বের কাছে। কিরীটি চাকমা বলেন, অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও লোক সঙ্গীতের দেশ বাংলাদেশ। সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা গ্রাম বাংলার পরতে পরতে মিশে আছে বাংলার আদি সংস্কৃতি লোকসঙ্গীত। আর লোকসঙ্গীতের একটি উল্লেখযোগ্য ধারা হল বাউল সঙ্গীত। তিনি বলেন, আগামী রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৫টায় আগরতলায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ১ নং হলের আয়োজিত বাউল উৎসবে প্রবেশাধিকার উন্মুক্ত থাকবে। বাউলরা একতারা বাজিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে তাদের তত্ত্বমূলক বাউল সংগীত মনের মাধুরী মিশিয়ে পরিবেশন করেন। গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, প্রেম-বিরহ, আচার-আচরণ প্রভৃতি সংগীতে ঝংকৃত হয়ে সহজিয়া মায়াময়ী রূপটি ফুটিয়ে তুলবে বাংলার বাউল সংগীতের মাধ্যমে। হাইকমিশনার বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বাঙালির হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা এবং আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ত্রিপুরা রাজ্যে জানান দিতেই মূলত প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আগরতলায় বাউল উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে, যা বাংলাদেশের বাউল সংগীতের স্বকীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বজায় থাকবে। তিনি বলেন, আগরতলা বাউল উৎসবে কুষ্টিয়ার ফকির লালন শাহ, বাংলার লোক কবি রাধারমণ দত্ত, সিলেট সুনামগঞ্জের হাসান রাজা ও বিশ্বখ্যাত বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের গান পরিবেশন করবেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান বাউল শিল্পীরা। -এমএ |