রামেকে যুক্ত হচ্ছে ৪০ বেডের স্পেশাল ইউনিট |
![]() ইউনিটটি চালু হলে বেডের সঙ্কট সমাধানসহ নবজাতক শিশুদের সঠিক ভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা যাবে। রামেক হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে নবজাতক শিশুদের বেডের সঙ্কট ছিলো ব্যাপক। হাসপাতালের চাহিদার তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি শিশু রোগীদের সেবা দিতে হিমসিম খেতে হয়েছে। আবার একসঙ্গে ৪-৫ জন শিশুকে একই বেডে রেখে সেবা দিতে হয়েছে। এ জন্য এক শিশুর ভাইরাসের ও ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা আরেক শিশু আক্রান্ত হয়েছে। দীর্ঘ সময়ে এই পরিস্থিতিতে সঠিক ভাবে চিকিৎসা দেওয়াও চিকিৎসকদের জন্য চ্যালেঞ্জের। শিশু বিভাগের তিনটি ইউনিট মিলে বেড সংখ্যা ১২০টি। কিন্তু রোগী ভর্তি হয় চার শতাধিক। কখনো এই সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচ শতাধিক। এমন অবস্থায় প্রতিটি সময় চ্যালেঞ্জ নিয়ে সেবা দিয়েছে কর্মরত চিকিৎসক-নার্সরা। প্রতিদিন বিভিন্ন অসুখ নিয়ে হাসপাতালে আক্রান্ত ছোট-বড় মিলে পাঁচ থেকে ছয় শিশু মারা যায়। এর মধ্যে নবজাতক শিশুর সংখ্যা বেশি। এদিকে কয়েকশ বাচ্চার বেড না থাকায় মেঝেসহ বাইরের বারান্দায় রাখতে হয় শিশুদের। স্ক্যানারের এই ইউনিট চালু হলে এই সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে। হাসপাতালে প্রতিদিন নবজাতক বাচ্চার সংখ্যা থাকে ১০০টির মতো। এই অবস্থায় ৪০ বেড যুক্ত হলেও আরও দরকার হবে ৬০টি বেড। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বাচ্চাদের মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য কেএমসির আলাদা বেড। পাশেই থাকবে ল্যাব, এরপর চেঞ্জিং ব্যবস্থা, এরপরেই প্রথম অবস্থায় থাকছে এনআইসিইউ'র ৭টি বেড। যেখানে প্রথম অবস্থায় বাচ্চাদের রাখা হবে। পরে এই বেডের বাচ্চাদের রাখা হবে স্টেপ ডাইন বেডে। এখানে বেডের সংখ্যা থাকছে মোট ৯টি। স্টেপ ডাউনের পরে আসবে সেপটিক এরিয়া বেড। এখানে বেড থাকবে মোট ১১টি। সেপটিক বেডের পরে নন সেপটিক এরিয়া বেডে মোট বেড থাকবে ১৩টি। এই বেডের কার্যক্রম প্রক্রিয়াটি শুরু হয় দেড় বছর আগে ২০১৮ সালের জুলাই মাস থেকে। বর্তমানে ওয়ার্ডের ২৭টি সরঞ্জাম বসানোর কাজ শেষ। আর ওয়ার্ডে সরবরাহকৃত অক্সিজেন, বিদ্যুৎ স্থাপন এবং ৯টি এসি যুক্ত হলেই এই ইউনিটটি চালু করা হবে। রামেক হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডা. বেলাল উদ্দিন জানান, বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর হার হাজারে ৩৮টি। এর মাঝে দুই তৃতীয়াংশ নবজাতক হচ্ছে কম ওজনের জন্ম নেয়া। এই বাচ্চাগুলো বেশির ভাগেরই সংক্রমণ হয়। যার মাঝে সেপ্টিসিমা হয়। এই বাচ্চাগুলোকে যদি আমরা আলাদাভাবে চিকিৎসা দিতে পারি তবে শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমে যাবে। তাই বিশেষভাবে স্ক্যানের ব্যবস্থাপনা হচ্ছে রামেক হাসপাতালে। তিনি আরও জানান, সেপ্টিসিমা, জন্ডিস এবং শ্বাসপ্রশ্বাসে বাঁধাগ্রস্ত হওয়া এই তিনটাই হচ্ছে অত্যন্ত কম ওজনের বাচ্চার মৃত্যুর কারণ। রামেক হাসপাতালে বাংলাদেশ সরকার ও ইউনিসেফের তত্ত্বাবধানে শিশু বিভাগে নতুন ৪০ শয্যা যুক্ত হতে যাচ্ছে। শুধু বিদ্যুৎ ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা হলে এর উদ্বোধন করা হবে। এটি হলে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান আরও বাড়বে। হাসপাতালটির উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, বর্তমান সরকার ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় নতুন এই ইউনিটটি দ্রুতই চালু হবে। সকল কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন শুধু অক্সিজেন ও বিদ্যুতের কিছু কাজ আছে তা হলেই ইউনিটটি চালু করা হবে। -আরএইচএফ/এমএ |