লালমনিরহাটে সেতু নির্মাণে নানা অনিয়মের অভিযোগ
Published : Thursday, 12 December, 2019 at 10:29 PM Count : 494
পাইলিং না করা, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করাসহ লালমনিরহাটের আদিতমারীতে সেতু নির্মাণে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়ার পর বন্ধ রয়েছে উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নে অবস্থিত গন্ধমরুয়া দোলার ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ।
জানা গেছে, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে উপজেলার বিভিন্ন সড়কের উপর ৭টি ব্রীজ নির্মাণের জন্য বরাদ্ধ দেয় ত্রাণ মন্ত্রনালয়। দরপত্রের মাধ্যমে এসব ব্রীজের নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করে কার্যাদেশ প্রদান করে কর্তৃপক্ষ। সেই কার্যাদেশ অনুসারে নির্মাণ কাজও শুরু করেন ঠিকাদাররা।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের গন্ধমরুয়া দোলার ওপর ২৯ লাখ ১৭ হাজার ৪শ’ টাকায় একটি ব্রীজ নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ পান গোলাম রব্বানী সোহেল নামে একজন ঠিকাদার। কিন্তু গোলাম রব্বানী সেই কাজ শামীম আলম নামে আর একজন ঠিকাদারকে দেন। শামীম আলম কমিশনে ক্রয় করে ব্রীজটির কাজ শুরু করেন। তবে বর্লি পাইলিং না করেই সিসি ঢালাই শেষ করেন ঠিকাদার। এতে করে ব্রীজটির স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এছাড়া ব্রীজটি সিসি ঢালাই কাজে আকারে বড় ও নিম্নমানের পাথর ব্যবহার করা হয়। অভিযোগ পেয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনসুর আলী।
অপরদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, আরও ৬টি ব্রীজের নির্মাণ কাজ শুরু করা হলেও, করা হচ্ছে না বর্লি পাইলিং।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একজন ঠিকাদার বলেন, ২৯ লাখ টাকার একটি ব্রীজে বর্লি পাইলিংয়ে ব্যয় ধরা আছে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। কাজ যতটুকু হবে বিলও ততটুকু পাব। পাইলিং না করলে সেই অংশের বিল ঠিকাদারকে দেয়া হয় না। কার্যাদেশে বর্লি পাইলিং ধরা থাকলেও বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তা করা হচ্ছে না। পাইলিং ছাড়া ব্রীজের স্থায়িত্ব কতটুকু সেটা প্রকৌশলীরা ভাল বলতে পারবেন।
জানতে চাইলে আদিতমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মফিজুল হক বলেন, সিডিউলে বর্লি পাইলিং দেয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও ওই এলাকার মাটির গুণাগুণ ভাল হওয়ায় বর্লি পাইলিং দেয়া হয়নি। যার অর্থ ফেরত দেয়া হবে। আর নিম্নমানের পাথর সরিয়ে ফেলতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেসব ব্রীজের বর্লি পাইলিং প্রয়োজন নেই সেখানে দেয়া হবে না। এর জন্য বরাদ্ধকৃত অর্থ ফেরত পাঠানো হবে। আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এর আগেও এ ধরনের খরচ না করা অর্থ ফেরত দেয়া হয়েছে।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর আলী বলেন, নিম্নমানের পাথর ব্যবহার করায় ব্রীজের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সিডিউল অনুযায়ী নির্মাণ কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি বর্লি পাইলিংয়ের প্রয়োজন না হয় তাহলে সেই অর্থ ফেরত দিতে প্রকৌশলীসহ ঠিকাদারের কাছে চুক্তিনামা করে নেয়া হবে। এছাড়া সিডিউল অনুযায়ী প্রতিটি কাজ তদারকির মাধ্যমে বুঝিয়ে নেয়া হবে এবং এ ব্যাপারে কারও কোন অনিয়ম পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এমএস/এসআর