সুপারির ফলন নিয়ে শঙ্কায় কাউখালীর চাষীরা
Published : Thursday, 28 November, 2019 at 12:57 PM Count : 553
সুপারির জন্য বিখ্যাত উপকূলীয় পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা। এ উপজেলার লোকজনের সারা বছরের আয়ের বড় অংশ আসে সুপারি থেকে। প্রতি বছরই এখানকার সুপারি সারাদেশে যায়। কিন্তু এবার সুপারির ফলন নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
সুপারির বাম্পার ফলনে বাগান মালিকদের মুখে হাসি থাকলেও রয়েছে শঙ্কা। সম্প্রতি দেশে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে সুপারি বাগানগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে চলতি মৌসুমে সুপারির উৎপাদন কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। যার ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে কৃষকদের।
কালের বিবর্তনে লাভজনক কৃষিপণ্য হিসেবে স্থান পেয়েছে সুপারি। কাউখালী উপজেলায় ব্যাপক হারে সুপারির চাষ হয়ে থাকে। এখনকার সুপারি মানে ভালো বলে সুপারির বাণিজ্যিক বাজার গড়ে উঠেছে। গত বছরের তুলনায় এবার সুপারির ফলন কম হয়েছে। তবে সুপারির বাজার চড়া থাকায় চাষীরা ভালো দাম পেলেও খুশী নন তারা। ফলন কম হওয়ায় হতাশ চাষীরা।
স্থানীয় সুপারি ব্যবসায়ীদের থেকে জানা যায়, কাউখালী উপজেলার পাচঁটি ইউনিয়নের সবক’টিতেই উৎপাদন হয় সুপারির। এক সময় সারাদেশে সরবরাহ করা হতো কাউখালীর সুপারি। তবে সেই অবস্থা না থাকলেও এখনও প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে সুপারি কাউখালী থেকে দেশের বিভিন্নপ্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এবার সুপারির ফলন নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়তে হচ্ছে উৎপাদনকারীদের।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, আপদকালীন সময়ে সুপারি বিক্রি করে সংসরের চাহিদা মিটছে অনেক কৃষকের। সুপারির চাষ লাভজনক হওয়ায় অনেকেই এখন সুপারি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকার পাকা ও শুকনো সুপারি কেনা-বেচা হয় কাউখালীতে।
কৃষক ও সুপারি ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, উপকূলে সুপারির সবচেয়ে বড় মোকাম কাউখালী। দক্ষিণাঞ্চলের ১২টি উপজেলা থেকে ব্যবসায়ীরা সুপারি নিয়ে বিক্রির জন্য কাউখালী শহরে গড়ে উঠা হাটে আসেন। এখানে প্রতি সপ্তাহের সোম ও শুক্রবার দুই দিন সুপারির হাট বসে।
তবে শুকনো সুপারির মৌসুম ফাল্গুন থেকে আষাঢ় পর্যন্ত এবং কাঁচা সুপারির মৌসুম শ্রাবণ থেকে অগ্রহায়ন পর্যন্ত। এ সময় বেশির ভাগ সুপারি ক্রয়-বিক্রয় হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সুপারি কিনে ভারতসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠান। আবার দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরাও এখানে আসেন সুপারি কিনতে। কাউখালী থেকে নিয়মিত সুপারি সংগ্রহ করেন। এখান থেকে প্রায় প্রতিদিন লঞ্চ, ট্রলার ও ট্রাকবোঝাই করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায় সুপারি।
কাউখালীর বাজারের সুপারি ব্যবসায়ী নাসির মীর বলেন, কাউখালীতে প্রতি হাটে প্রায় অর্ধকোটি টাকার পাকা ও শুকনো সুপারির কেনা-বেচা হয়। প্রতি বছর এই মৌসুমে বিভিন্ন হাট থেকে সুপারি কিনে মজুদ করা হয়। শুকিয়ে ও পানিতে ভিজিয়ে সুপারি সংরক্ষণ করা হয়। পরে তা দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। সুপারি এলসির মাধ্যমে ভারতেও যাচ্ছে।
তিনি বলেন, গত মৌসুমে সুপারির দাম ছিল অনেক ভাল। তবে এবার সুপারির দাম বাড়তির দিকে। বর্তমান মৌসুমে ২১ ঘা (২১০টি) এক কুড়ি কাঁচা সুপারির মূল্য শ্রেণী ভেদে ২৬০ থেকে ৩১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত মৌসুমের তুলনায় অনেক বেশি।
কাউখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলী আজিম শরিফ বলেন, এখানকার মাটি ও আবহাওয়া সুপারি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এ কারণে এখানকার সুপারি আকারে অনেক বড় হয়।
-আরএইচআর/এমএ