আবাদী জমির মাটি যাচ্ছে ইট ভাটায়
Published : Tuesday, 26 November, 2019 at 11:19 AM Count : 431
নওগাঁর রাণীনগরে আবাদী জমির মাটি যাচ্ছে ইট ভাটায়। এতে দিন দিন কমে যাচ্ছে কৃষি জমির পরিমাণ। উপজেলার ১০টি ইট ভাটার মালিকরা ফসলি জমি থেকে অবাদে মাটি কেটে ইট তৈরির কাজে ব্যবহার করছেন। কৃষকদের অর্থের লোভ দেখিয়ে কৃষি জমির টপ সয়েলগুলো কেটে ব্যবহার করছেন ইট ভাটায়। ফলে তিন ফসলের কৃষি জমিগুলো পুকুর ও জলাশয়ে পরিণত করা হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। আর কমছে উৎপাদনের হার।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ২১ হাজার হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। শ্রেণী ভেদে প্রায় সকল জমিতেই সারা বছর কোন না কোন ফসল চাষ করা হয়। ধান চাষে লাগাতার লোকসান হওয়ার কারণে কৃষকরা ভাটার মালিকদের দ্বিগুণ অর্থের লোভে প্রতি গাড়ি (ট্রাক্টর) মাটি ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকায় বিক্রয় করায় এক ফিট গর্ত করে প্রতি বিঘায় প্রায় ১৮ হাজার টাকার মাটি বিক্রয় করছেন। ফলে নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে কৃষি জমি থেকে মাটি খনন করায় দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসলী জমির পরিমাণ।
প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ২ শতাধিক ট্রাক্টর, মিনি ট্রাক মাটি কেটে ভাটায় পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছে। উপজেলার কাশিমপুর, মিরাট, ধনপাড়া, রামরায়পুর, মন্ডলেরপুল, খট্টেশ্বর হাদিপাড়া এলাকায় কৃষি জমি থেকে অবাধে মাটি কেটে ভাটায় ইট তৈরির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রায় ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও শুধু ইট ভাটায় কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রয় করার কারণে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে প্রায় ৪শ’ হেক্টর জমিতে ইরি ধান চাষ কম হবে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় জমির মাটি ইট ভাটায় বিক্রির প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাটি কেটে জমি নিচু করার ফলে ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়। উর্বর শক্তি কমে যাওয়ার ফলে এই জমিতে আশানুরুপ ফলন হবে না। কৃষকরা না বুঝে অর্থের লোভে জমিগুলোর স্থায়ী ক্ষতি করছেন। পরবর্তিতে এই জমিগুলোতে ফসলের ফলন কম হওয়ার কারণে কৃষকরা ফসল চাষে আগ্রহ কমে যাচ্ছে। তাই দ্রুত এই মাটি বিক্রির কার্যক্রম বন্ধ করতে না পারলে আশঙ্কাজনক হারে ক্ষতির সম্মুখীন হবে দেশের কৃষি সেক্টর। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল-মামুন বলেন, এ বিষয়ে লিখিত ভাবে অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
-এমএ