ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’ উপকূলীয় ১৬ জেলায় ২২ হাজার ৮শ ৩৬ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’র প্রভাবে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন তিনি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ৫০ হাজার ৫০৩ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ২২ হাজার ৮৩৬ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২৬৩ কোটি ৫ লাখ টাকা।’
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক আক্রান্ত ফসলি জমির পরিমাণ ২ লাখ ৮৯ হাজার ৬ হেক্টর (মোট আবাদকৃত জমির ১৪ শতাংশ) এবং ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ২২ হাজার ৮৩৬ হেক্টর (মোট আক্রান্ত জমির ৮ শতাংশ)। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের পরিমাণ ৭২ হাজার ২১২ টন।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বন্যায় আক্রান্ত ২ লাখ ৮৯ হাজার ৬ হেক্টর জমির মধ্যে রোপা আমন ২ লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৮ হেক্টর, সরিষা ১ হাজার ৪৭৬ হেক্টর, শীতকালীন সবজি ১৬ হাজার ৮৮৪ হেক্টর, খেসারি ৩১ হাজার ৮৮ হেক্টর, মসুর ১৯৫ হেক্টর, পান ২ হাজার ৬৬৩ হেক্টর এবং অন্যান্য ৩ হাজার ১২৬ হেক্টর জমি রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে প্রাথমিকভাবে ১৬টি জেলায় রোপা আমন, শীতকালীন শাকসবজি, সরিষা, খেসারী, মসুর ওপেন ফসলের আক্রান্তের তথ্য পাওয়া গেছে। বুলবুলে আক্রান্ত জেলাগুলো হচ্ছে, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নড়াইল, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষীপুর।’
এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আক্রান্ত জমির পুরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কোন কোন জমির ফসল আংশিক ক্ষতি হয়েছে। তবে ধানের বড় অংশটিই পরিপক্ক হয়ে উঠেছিল। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পুরো হিসাব আমরা দিতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বর্ধিত প্রণোদনা কর্মসূচির প্রস্তাবনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে অতি দ্রুত প্রণোদনা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কৃষি লোনের ব্যাপারেও বাংলাদেশ ব্যাকের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় কার্য সম্পাদন করা হবে। যাতে করে আক্রান্ত কৃষকদের ঋণের ব্যাপারে সহজ শর্ত দেয়।’
'বুলবুলে ফসলের ক্ষতি বাজারে প্রভাব পড়বে কি না' জানতে চাইল আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘গত বোরো ও আমনে অতিরিক্ত উৎপাদন হয়েছিল। এবার আমন মাঠে যে ফসল আছে…ধান কাটা কেবল শুরু হয়েছে। আমার আশা করছি, খুব ভালো ফলন হবে। এ ক্ষতি বাজারে তেমন কোন প্রভাবে ফেলবে বলে মনে করি না।’
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. আরিফুর রহমান অপু, অতিরিক্ত সচিব (এফএমএম) হাসানুজ্জামান কল্লোল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল ম্ঈুদ, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাজাহান কবীর উপস্থিত ছিলেন।
-এমএ