ক্রিকেটারদের ১৩ দফা দাবির অধিকাংশই মেনে নেয়ায় আন্দোলন স্থগিত করে খেলায় ফেরার কথা জানিয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষ সাংবাদিকদের একথা জানান বোর্ড চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান পাপন। এ সময় তাঁর পাশেই বসা ছিলেন ধর্মঘটের নেতৃত্ব দেয়া সাকিব।
এর আগে ১১ দফা দাবির সঙ্গে ক্রিকেটার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) কর্মকর্তাদের পদত্যাগ ও প্রফেশনাল ক্রিকেট অ্যাসোশিয়েশন গঠনসহ ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করেছে আন্দোলনরত ক্রিকেটাররা। বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় গুলশানের একটি হোটেলে কিছুক্ষণ আগে আন্দোলনরত ক্রিকেটারদের প্রতিনিধি ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান সংবাদমাধ্যমের সামনে এই ১৩ দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো-
১। ক্রিকেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের বর্তমান সদস্যদের পদত্যাগ করতে হবে। এই সংগঠনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রফেশনাল ক্রিকেটার অ্যাসোসিয়েশন নামে আরেকটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ক্রিকেটাররা নির্বাচন করেই তাদের ঠিক করবেন। পেশাদার ক্রিকেটারদের স্বার্থ নিয়ে তারা কাজ করবে।
২। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগসহ ঢাকার অন্য লিগগুলো আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে হবে। প্লেয়াররা যাতে নিজের পছন্দে ক্লাব চয়েস করতে পারে।
৩। বিপিএল আগামী বছর থেকে আগের নিয়মে নিতে হবে। প্লেয়ার কেনার ক্ষেত্রে। আর বিদেশি ও দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে হবে।
৪। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ম্যাচ ফি ১ লাখ টাকা দিতে হবে এবং পারিশ্রমিক আরও বাড়াতে।
৫। খেলার সুবিধা আরও বাড়াতে হবে।
৬। জাতীয় ক্রিকেটের চুক্তিতে খেলোয়াড় বাড়াতে হবে।
৭। স্টাফ, গ্রাউন্ডসম্যান, কোচিং স্টাফদের বেতন ও সুবিধা বাড়াতে হবে। বিদেশিদের মতো বিবেচনা করতে হবে।
৮। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট ম্যাচ ও টুর্নামেন্টে বাড়াতে হবে। এছাড়া ঘরো টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টও বাড়াতে হবে।
৯। ঘরোয়া ক্রিকেটে ক্যালেন্ডার করে তা মেনে খেলতে হবে।
১০। খেলোয়াড়দের বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে সময় মতো।
১১। দুটির বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজেত খেলতে দিতে হবে।
১২। ক্রিকেটের ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও ক্রিকেটের আয়ের একটা অংশ ক্রিকেটারদের দিতে হবে।
১৩। নারী ক্রিকেটারদের তাদের ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে।
এদিকে ক্রিকেটাররা কেন ধর্মঘট করছে দুপুরে এনিয়ে বিসিবি সভাপতি গণভবনে ডেকে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন বোর্ড পরিচালক নাঈমুর রহমান। গণভবন থেকে বেরিয়ে পাপন বলেন, ক্রিকেটারদের সব দাবি মেনে নিতে প্রস্তুত বোর্ড। তিনি ক্রিকেটারদের আলোচনার কথা বলেন।
তবে সাকিব-মুশফিকরা বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা না করে গুলশানের একটি হোটেলে জমায়েত হন। বোর্ডের সঙ্গে তারা কখন আলোচনায় বসবেন সেটি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন সাকিব আল হাসান।
এর আগে গত সোমবার (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট ব্যবস্থাপনার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে ১১ দফা দাবি জানিয়েছেন ক্রিকেটাররা। আর এসব দাবি না মানা পর্যন্ত সবধরনের ক্রিকেট থেকে বিরতিতে থাকবেন জাতীয় দল ও জাতীয় দলের বাইরে থাকা সব ক্রিকেটাররা।
ক্রিকেটারদের দাবির প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হাজির হয়ে বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন দাবি করেন, ক্রিকেটারদের দাবিগুলো ‘অযৌক্তিক’। শুধু তাই না, তার মতে এসব করা হচ্ছে দেশের ক্রিকেটকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে।
এইচএস