আগামী ৪ অক্টোবর শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর কদিন পরই দেবী দুর্গা আসছেন মর্তলোকে। তার আগমনকে ঘিরে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষদের মধ্যে যেমন শুরু হয়েছে দেবীদুর্গার আগমনী বার্তা। ইতোমধ্যে মন্দিরগুলোকে ঝেড়ে পরিস্কার করা হয়েছে। স্থায়ী মন্দিরগুলোকে রং করা হচ্ছে। আলোক সজ্জা ও তোরণ নির্মাণের প্রস্ততি শুরু হয়ে গেছে।
অন্য দিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিমা সরবরাহ করতে হবে তাই রাতদিন কাজ করে প্রতিমা তৈরীর কাজ সেরে নিচ্ছেন প্রতিমা তৈরীর কারিগররা। এতে হাত লাগিয়েছেন পরিবারের নারী, পুরুষ, ছোট, বড় সব সদস্যই। তাদের যেন দম ফেলার সময় নেই। তাই এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজগঞ্জের পাল পাড়ার প্রতিমা তৈরির কারিগররা। প্রতিমার মাটির কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছেন অনেকে। এখন চলছে সাদা রংয়ের প্রলেপ দেয়ার কাজ এবং অনেকে প্রতিমা তৈরির প্রাথমিক কাজ শেষে এখন একটু একটু করে নিপুণ হাতে রং তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলছেন দেবী দুর্গার প্রতিমা।
কামারখন্দ উপজেলার বাজার ভদ্রঘাট পালপাড়ার দিলীপ পাল জানান, আমাদের এখানে তৈরী প্রতিমার দেশব্যাপী চাহিদা রয়েছে। এই পালপাড়া থেকে জেলায় এবং বগুড়া, নাটোর, নওঁগা সহ উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলায় প্রতিমা সরবরাহ হয়ে থাকে। আসন্ন দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে পালপাড়ায় এ বছর ১৫০টি প্রতিমা তৈরি করা হচ্ছে। মাটি ও রংয়ের কাজের প্রকার ভেদে প্রতিটি প্রতিমা ১০ হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ টাকায় বিক্রি করা হবে।
একই গ্রামের সুরেশ পাল জানান, এখন আমাদের প্রতিমা তৈরীর মৌসুম। তিনি এবছর ২০টি প্রতিমা তৈরী করছেন।নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিমা সরবরাহ করতে হবে তাই ব্যস্ততা রয়েছে এজন্য দিন রাত কাজ করা হচ্ছে এবং প্রতিমা তৈরীর কাজ দ্রুত শেষ করতে পরিবারের সবাই কাজে সহযোগীতা করছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্র থেকে জানা যায়, এ বছর জেলায় ৪৯৫টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। যা গত বছরের তুলনায় ১১টি বেশী। গত বছর জেলায় ৪৮৪টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) টুটুল চক্রবর্ত্তী বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে প্রতিটি পূজা মন্ডপে পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। জেলার অতি গুরুত্বপূর্ণ পূজা মন্ডপ চিহ্নিত করা হয়েছে সে মন্ডপ গুলোতে বিশেষ নজর রাখা হবে। এছাড়া জেলা ব্যাপী টহলে থাকবে পুলিশ দল ।
জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ জানান, শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে মতবিনিময় করা সহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রতিটি পূজা মন্ডপে পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পূজার সময়ে ২৪ ঘণ্টা টহলে থাকবে পুলিশ ও র্যাব বাহিনীর সদস্যরা।
আগামী ৪ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা এবং ৮ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তা শেষ হবে।
এবি/এইচএস