পূর্ণসামরিক মর্যাদায় সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল পৌনে ৬টার দিকে রংপুরে গ্রামের বাড়ি পল্লীনিবাসের লিচু বাগানে তাঁকে দাফন করা হয়। প্রথমে এরশাদকে গান ক্যারেজে বহন করে কফিন কবরের পাশে নেওয়া হয়। এরপর জাতীয় পার্টি প্রধানের জীবন বৃত্তান্ত পড়ে শোনানো হয়। এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে শুরু হয় দাফন প্রক্রিয়া। এরপর সময় সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে বিদায়ী স্যালুট দেয়া হয়।
এর আগে রংপুরের মানুষের ভালোবাসায় শ্রদ্ধা রেখে বনানীর সামরিক করবস্থানের পরিবর্তে এরশাদের বাসভবন পল্লী নিবাসেই দাফন করার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় পার্টি। দুপুরে পার্টির সিনিয়র নেতারা এরশাদকে সমাহিত করার বিষয়ে চূড়ান্ত এ সিদ্ধান্ত নেন।
জাতীয় পার্টি সূত্র জানায়, পল্লী নিবাসে এরশাদের সমাহিত করার অনুমতি দিয়েছেন তার স্ত্রী ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ। এসময় রওশন এরশাদের কবরের পাশে তাঁর জন্য একটি কবরের জায়গা রাখার অনুরোধও করেছেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু এরশাদ রংপুর-৩ (সদর) আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি এ আসন থেকে টানা ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। রংপুরকে জাতীয় পার্টির ঘাঁটি বিবেচনা করা হয়। এরশাদ জেলে থেকেও এখান থেকে ভোট করে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন।
তার আগে বেলা ২টা ২৯ মিনিটে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মরদেহ পল্লী নিবাসে নেয়া হয়। এরশাদের কফিনবাহী গাড়িতে ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা।
বেলা পৌনে ১২টায় এরশাদের মরদেহ বহনকারী হেলিকপ্টার রংপুর সেনানিবাসে এসে পৌঁছায়। প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো দেখতে সকাল থেকেই জানাজা মাঠে উপস্থিত হতে থাকেন দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। বিশৃঙ্খলা এড়াতে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। মরদেহ আসার পর পরই পুলিশি বেষ্টনী ভেঙে মরদেহের কাছে ছুটতে থাকেন দলীয় নেতাকর্মীরা। উপচে পড়া ভিড়ের মাঝে শুরু হয় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা এরশাদের মরদেহ রংপুরে দাফনের জন্য স্লোগান দিতে থাকেন।
গত রোববার (১৪ জুলাই) ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তিনি রক্তে সংক্রমণসহ লিভার জটিলতায় ভুগছিলেন।
এইচএস