সেতু আছে, সড়ক নেই |
![]() জনদুর্ভোগ লাঘবে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে একটি সেতু। নামেই এটি দাঁড়িয়ে আছে নদীর ওপর। সংযোগ সড়ক না থাকায় কোনো কাজেই আসছে না সেতুটি। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের নরপাড়া গ্রামে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে যমুনার শাখা লৌহজং নদীর বইরাগী ঘাটে সেতুটি নির্মিত হয়েছে। সেতুটি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের বাদাই এলাকার সীমান্তবর্তী। দুই জেলার সংযোগ মাধ্যম হিসেবে দুটি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এ নদী পার হয়ে যাতায়াত করে। সংযোগ সড়ক না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুর সঙ্গে বাঁশের সাঁকো যুক্ত করে যাতায়াত করছেন এলাকাবাসী। এতে শিশু, নারী ও কোমলমতি শিক্ষার্থী ছাড়াও রোগী নিয়ে পার হতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জেনেও কোনো প্রতিকার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। সরেজমিনে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) আওতায় ২০১৭ সালে সরিষাবাড়ী উপজেলার নরপাড়া ও গোপালপুর উপজেলার বাদাই এলাকার সীমান্তবর্তী লৌহজং নদীর বইরাগী ঘাটে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে এটির নির্মাণ কাজ করেন গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু। দুটি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম এ পথটি। দুই বছর ধরে সেতুটি নির্মিত হলেও পশ্চিমপ্রান্তে সংযোগ সড়ক করা হয়নি। ফলে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে এটি। শুকনো মৌসুমে নদীর তলদেশে হেটে পার হলেও বন্যার সময় নৌকাই ভরসা। তবে সেতু নির্মাণের পর স্থানীয়রা এখন বাঁশের সাঁকো বানিয়ে কোনো রকম যাতায়াত করছে। বাদাই গ্রামের বাসিন্দা গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ঝাওয়াইল ইউনিয়নের ৪/৫টি গ্রামের সাত শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে, যারা সরিষাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে। এসব কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নদী পার হতে হয় বাঁশের সাঁকো দিয়ে। এছাড়া হাট-বাজার করতে এলাকাবাসীকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে গোপালপুর সদরে যেতে হয়। অথচ সেতুটি কাজে লাগাতে সংযোগ সড়ক নির্মাণ হলে যাতায়াতে দুর্ভোগ লাঘব হবে।’ নরপাড়া গ্রামের মুন্সী সেকান্দার আলী জানান, ‘সীমান্তবর্তী মানুষদের কষ্ট দেখার কেউ নেই। দুই বছর আগে সেতু হলেও সড়কে মাটি নেই। সেতুর পশ্চিম পার্শ্বের সড়কটি সংস্কারের জন্য পিংনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না।’ এ ব্যাপারে পিংনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয় বলেন, ‘জমি নিয়ে কিছু সমস্যা আছে, তাই সেতুর সংযোগ সড়ক করা সম্ভব হয়নি।’ গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুস তালুকদার ঠান্ডু বলেন, ‘সেতুর দুই প্রান্তের মানুষের যাতায়াত সমস্যা দূর করতেই দুই বছর আগে এটি নির্মাণ করেছি। গোপালপুর অঞ্চলে সংযোগ সড়ক থাকলেও সরিষাবাড়ীর সীমানায় সড়ক নেই। এটি নির্মাণ করা সংশ্লিষ্ট উপজেলার দায়িত্ব। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুর্ভোগ কমছে না।’ সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ -এমএ |