এক বছর ধরে ডিস্টার্ব করছে নয়ন, বিষয়টি রিফাতও জানতো: মিন্নি |
আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বরগুনায় স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফ (২৫) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তা দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। ঘটনাটি বুধবার সকালের বরগুনায় এই ঘটনাটি ঘটে। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় হত্যাকাণ্ডের সেই নির্মম ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি। আয়েশা সিদ্দিকা জানান, রিফাতের সঙ্গে দুই মাস আগে তার বিয়ে হয়। তবে এর প্রায় বছর খানেক আগে থেকেই সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড তাকে উত্ত্যক্ত করতেন। মিন্নি বলেন,‘রিফাতের সাথে আমার দুই আড়াই বছরের সম্পর্ক। আর এই নয়ন আমাকে ডিস্টার্ব করে এক বছরের মতো হইছে। ও আগে অল্প করত, তারপর দিনের পরদিন বাড়তে থাকে। ফোনে কথা বলতে হইবে, তারপর আমি রিকশায় গেলে রিকশায় লাফ দিয়ে উঠত। এক জায়গায় গেলে ওই জায়গা গিয়ে ডিস্টার্ব করত। ওই জায়গায় গিয়ে হুমকি-ধামকি দিত। “আমার সাথে কথা না বললে মাইরে ফালাব। আমার কথা কাউরে বললে তোর খবর আছে। তোরে জানে শেষ করে ফেলব।” পরে আমি অনেক ভয় পাই। আমার বাসার সবার সাথে শেয়ার করি। পরে আমার আব্বু আমার কাকাদের সাথে আলাপ করে রিফাতের সাথে আমার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয়।’ মিন্নি আরো বলেন, ‘বিয়ে হইছে দুই মাস হয়। আমরা দুজনে খুব ভালোই ছিলাম। খুব সুখেই ছিলাম। একজন আরেকজনরে ছাড়া থাকতেই পারতাম না। কিন্তু নয়নের ডিস্টার্ব করা কমেই না। আমাকে ডিস্টার্ব করতেই থাকে। আমার স্বামীও জানত। এখন এই নিয়ে কোনো ঝামেলা হইছে কি না জানি না। আমি কলেজে গেছিলাম ও আমারে আনতে গেছিল সে। পরে আমরা কলেজ থেকে বের হই, তখন কিছু ছেলে এসে রিফাতকে মারা শুরু করে। আমি অনেক চেষ্টা করি ফেরানোর জন্য। কিন্ত পারিনি। পরে রামদা নিয়া আক্রমণ করে; আমি অনেক চেষ্টা করছি, আমি অস্ত্র ধরছি, তাদের ধরছি, চিৎকার করছি। কেউ আগায়ে আসে নাই, কেউ একটু হেল্প করে নাই। আমি খুব আপ্রাণ চেষ্টা করছি। কিন্তু আমার স্বামীকে বাঁচাইতে পারি নাই। আমি রিফাতকে একলা হাসপাতালে নিয়া গেছি।’ ভিডিও ফুটেজে দেখতে পাওয়া লোকজন সম্পর্কে আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘এই মানুষ কিছু দাঁড়ায়ে দেখছে। আর কিছু ছেলেরা আছে যারা প্রথমে ওরে আক্রমণ করছিল। পরে তো দুজনে না, তিনজনই (রামদা) নিয়া আসছে। কিন্তু প্রথমে দাঁড়ানো যে ছেলেগুলো ছিল, প্রথমে ওরা আক্রমণ করছে। আর আশেপাশে তো সবাই দেখছে কেউ আগায়ে আসে নাই, কেউ আমারে কোনো রকম হেল্প করে নাই।’ জড়িতদের শাস্তির বিষয়ে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। আমি নয়ন, রিফাত ফরাজী, রেশান ফরাজী আরো ওই জায়গায় যারা ছিল প্রত্যেকের ফাঁসি চাই।’ বিয়ের আগে নয়নের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল কি না বা আর কেউ বিরক্ত করত কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে রিফাতের স্ত্রী বলেন, ‘কোনো সম্পর্ক ছিল না। ওই আমাকে হুমকি-ধামকি দিত, বিরক্ত করত। আমি ভয়ে কারও কাছে বলতাম না, পরে আমি বলছি।’ এইচএস |