বউ নিয়ে দ্বন্দ্বে ছাত্রলীগ নেতাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা |
![]() রিফাত শরীফ রিফাত বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচের মাইঠা-লবনগোলা এলাকার দুলাল শরীফের ছেলে। সে ছাত্রলীগের জেলা কমিটির সদস্য। বুধবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাতকে রাম দা দিয়ে কুপিয়ে যখম করে তিন যুবক। বিকেল চারটার দিকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শী ওই এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সকাল সাড়ে দশটার দিকে কলেজের সামনে তিনজন যুবক রিফাতকে রাম দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায়। তাঁকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠান। বিকেল চারটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু হয়। নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ জানান, দুইমাস আগে রিফাত পুলিশ লাইন এলাকার কিশোরের মেয়ে আয়শা আক্তার মিন্নিকে বিয়ে করে। নিজের সাবেক স্ত্রী দাবি করে পশ্চিম কলেজ সড়কের নয়ন নামের এক যুবক মিন্নিকে উত্যক্ত করতে শুরু করে এবং ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে। এ নিয়ে রিফাতের সাথে নয়নের বিরোধের সৃষ্টি হয়। রিফাতের বাবার দাবি ওই ঘটনার জের ধরে সকালে নয়ন, রিফাত ফরাজী, রিশান ফরাজী ও রাব্বি আকন রিফাতকে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায়। এদিকে রিফাতের স্ত্রি মিন্নি জানান, রিফাতের সঙ্গে দুই মাস আগে বিয়ে হয় তার। তবে এর আগে থেকেই এলাকার বখাটে সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড তাকে উত্ত্যক্ত করতো। মিন্নি বলেন, ‘বিয়ের আগে থেকেই নয়ন আমাকে বিরক্ত করতো। তার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে হবে, কথা না বললে মেরে ফেলবে, রাস্তাঘাটে আমার রিকশায় জোর করে উঠবে, এসব কথা কাউকে বললে মেরে ফেলবে বলে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিল। এরপর বিষয়টি পরিবারকে জানালে রিফাতের সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তবে বিয়ের আগ থেকেই রিফাতের সঙ্গে আমার ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে মিন্নি বলেন, ‘বিয়ের পরও নয়ন আমাকে বিরক্ত করে আসছিল। বিষয়টি আমি আমার স্বামীকেও জানিয়েছিলাম। বুধবার (২৬ জুন) সকালে আমি কলেজে যাই। রিফাত আমাকে কলেজ থেকে আনতে গিয়েছিল। আমরা কলেজ থেকে বের হই। কলেজের গেটে ওঁৎ পেতে থাকা কিছু সন্ত্রাসী এ সময় রিফাতকে কলেজ গেট থেকে টেনে নিয়ে নয়ন বন্ড ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের কাছে নিয়ে যায়। তারা রিফাতকে আক্রমণ করে। মারার চেষ্টা করে। আমি অনেক চেষ্টা করেও ফেরাতে পারিনি। রাম দা নিয়ে আক্রমণ করে। আমি অনেক চেষ্টা করছি, অস্ত্র ধরছি, তাদের ধরছি, চিৎকার করছি। কেউ আগায়া আসে নাই। কেউ আমারে একটু হেল্প করে নাই। আমি একলা হাসপাতালে নিয়া গেছি।' তিনি দাবি করে, রিফাতকে যখন দুই তিনজন রাম দা নিয়ে কোপাচ্ছিল, তখন আশপাশে এদের সহকারীরা দাঁড়িয়ে ছিল। ওই ছেলেগুলোই প্রথমে রিফাতকে মারধর করেছিল। বরগুনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবির হোসেন মাহমুদ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ভিডিও ফুটেজ এর মাধ্যমে আসামি শনাক্ত করে তাদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এমএমএম/এইচএস |