ডিমের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবার নতুন উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ঢাকা মহানগরীর উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৩টি স্থানে উৎপাদক থেকে সরাসরি ডিলার পর্যায়ে ডিম সরবরাহ করবে ভোক্তা অধিদপ্তর। এতে মধ্যস্তভোগীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় ভোক্তা পর্যায়ে ডিমের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকবে বলে মনে করছেন ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান।
তিনি বলেন, আগামী তিনদিনের মধ্যে ঢাকায় এই কার্যক্রম শুরু হবে। দুই সপ্তাহের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার টিসিবি ভবনে অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই উদ্যোগের কথা জানান মোহাম্মদ আলীম আখতার খান।
এর আগে ডিমের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে উৎপাদক থেকে ডিলার পর্যায়ে সরাসরি ডিম সরবরাহের জন্য ঢাকা মহানগরের বড় বড় বাজারের ডিম বিপণন স্থান বৃদ্ধির বিষয়ে ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, এজেন্ড, ডিলার, পাইকারী, খুচরা ব্যবসায়ী, বিভিন্ন বাজার কমিটি, ডিম ব্যবসায়ী সমিতি ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। এর পরে সভার সিদ্ধান্ত সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি।
মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তেজগাঁও বাজার, মিরপুর-১, মিরপুর-১০, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, সাদেক খান কৃষি মার্কেট (মোহাম্মদপুর) ও উত্তরা-১০ (খামারপাড়া রোড) স্থানসমূহে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কাপ্তান বাজার, নিউ মার্কেট, খিলগাঁও, জুরাইন, কোনাপাড়া সারুলিয়া, শনিরআখড়া ও চিটাগাংরোডসহ মোট ১৩ টি কেন্দ্রে প্রতিদিন ২০ লাখ ডিম সরাসরি উৎপাদক থেকে এজেন্ট বা ডিলারের মাধ্যমে ভোক্তাদের জন্য সরবরাহ করা হবে। এর সার্বিক দায়িত্বে থাকবে দুই সিটি কর্পোরেশন। এরমধ্যে তেজগাঁও বাজার ও কাপ্তান বাজারে প্রতিদিন ৬.৫ লাখ করে মোট ১৩ লাখ, এবং অবশিষ্ট ১১টি বাজারে মোট ৭ লাখ ডিম সমানুপাতিক হারে বন্টন করে বিক্রির জন্য সরবরাহ করা হবে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আজ অনুষ্ঠিত সভায় নেয়া সিদ্ধান্ত অনুসারে নির্ধারিত ১৩টি বাজারে ডিম সরবরাহের লক্ষ্যে গাড়ি পার্কিংসহ লোডিং-আনলোডিং এর জন্য পর্যাপ্ত জায়গার বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসকদেরকে মৌখিকভাবে জানানোর পাশাপাশি চিঠিও দেয়া হয়েছে।’
এছাড়াও, চাহিদা কম থাকাকালীন সময়ে ডিম সংরক্ষণের বিষয়ে আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে একটি ডিম সংরক্ষণ সংক্রান্ত খসড়া নীতিমালা প্রণয়নের জন্য কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে দ্রুতই গণমাধ্যমকে জানানো হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘বর্তমানে দেশের মোট ডিমের চাহিদা প্রতিদিনে ৪.৫ কোটির কিছু বেশি, বর্তমানে যার মধ্যে কিছু পরিমাণ আমাদের আমদানি করতে হয়। সরবরাহকারিরা আমাদের প্রথম বৈঠকে জানিয়েছিলেন যে প্রতিকূল আবহাওয়া ও আকস্মিক দুর্যোগ না থাকলে অভ্যন্তরীণভাবে চাহিদা মেটানো সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সংকট কাটাতে সরকার আমাদের ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছেন ঠিকই, কিন্ত প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্য ভবিষ্যতে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকেই দেশের চাহিদা সম্পূর্ণভাবে মেটানো, যেটা আমাদের পক্ষে সম্ভব বলে আমরা মনে করি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) আব্দুল জলিল, পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার বিভাগ) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, উপপরিচালক (কার্যক্রম) আতিয়া সুলতানা এবং উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও প্রচার উপবিভাগ) আফরোজা রহমান।
আরইউ