'টিফিনের সময় ক্লাসে বসি থাকি'
Published : Tuesday, 5 November, 2024 at 3:25 PM Count : 370
'টেলিভিশনে, মোবাইলে দেখি বিভিন্ন স্কুলের মেয়েরা ফুটবল খেলে, ক্রিকেট খেলে। আমাদের খেলার জায়গা নেই, খেলবো কেমনে। টিফিনের সময় ক্লাসে বসি থাকি।'
ভারাক্রান্ত কণ্ঠে ডেইলি অবজারভারকে কথাগুলো বলছিলো গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার শৌলদহ মুশুরীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ঐশী।
বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা টিফিনের সময় ক্লাস রুমে বসে থাকে, বিদ্যালয়ের বারান্দায়, বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর না থাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে স্কুল পার্শবর্তী রাস্তায়। কারণ, তাদের স্কুলে নেই কোনো খেলার মাঠ। মাঠ না থাকায় তাদের বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তেমন জাঁকজমকপূর্ণ হয় না। টিফিনের সময় ভবনের চার দেয়ালের ভেতরেই কাটাতে হয়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জানায়, বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের তুলনায় বাইরের শিক্ষা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব তৈরি হয়। খেলতে গিয়ে একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে, সামাজিকীকরণ হয়। খেলার মাঠ না থাকায় কোমলমতি শিশুরা খেলাধুলা ও চিত্তবিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নিকট বিদ্যালয়ে একটি খেলার মাঠের জোর দাবি জানাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুশীল রায় ডেইলি অবজারভারকে বলেন, শারীরিক ও মানসিক বিকাশের অন্যতম মাধ্যম খেলাধুলা। শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশও এই খেলাধুলা। প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলাধুলা চর্চা থাকাও গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো খেলার মাঠ নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা করতে পারছে না।
তিনি বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের আওতাধীন জমির পরিমাণ দৈর্ঘ্য ২৬০ ফুট, প্রস্থ ১২০ ফুট, গভীরতা ২০ ফুট। খেলার মাঠের ব্যবস্থা করতে পারলে চিত্তবিনোদনে শিক্ষার্থীদের মন বিকশিত ও পড়াশোনায় আগ্রহী হত। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সার্বিক দিক বিবেচনা করে বিদ্যালয়টিতে খেলার মাঠ তৈরিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সিদ্দিকী নূর আলম ডেইলি অবজারভারকে বলেন, শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলার মাধ্যমে শারীরিক বিকাশ না ঘটলে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। যেহেতু বিদ্যালয়টিতে খেলার মাঠ তৈরি করার মতো জায়গা রয়েছে, তাই অতি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা করার জন্য মাঠের ব্যবস্থা করা হবে।
-এটি/এমএ