ধ্বংসস্তুপে পরিণত হাজীগঞ্জ পৌরসভাসহ একাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান
Published : Monday, 5 August, 2024 at 7:37 PM Count : 157
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষ, হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে একজনের মৃত্যু, পুলিশ ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত এবং পৌরসভাসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।
দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ছয়টি গাড়ি, বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পুড়ে হয়। এছাড়াও, পৌরসভার বেশ কয়েকটি গাড়িসহ যাত্রী ও মালবাহী যানবাহন এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হয়েছে।
রোববার বিকেল ৩টার দিকে পৌরসভা এলাকায় কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে একটি মোটরসাইকেল, পৌরসভা কার্যালয়ে তিনটি গাড়ি ও চারটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা। এতে পৌর ভবনে আটকা পড়েন মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আটকে পড়াদের উদ্ধার করেন।
এর মধ্যে রোববার বিকেলে পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের এক নেতার বাবা আজাদ সরকারকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা। রাতে তিনি কুমিল্লা একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় শিক্ষার্থীদের সাথে যোগ দেয় বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীরা।
রোববার রাতে ও সোমবার সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও লুঠপাট করে দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের দোকান-ঘর রয়েছে।
এছাড়াও, সোমবার সকালে আবারও পৌরসভা কার্যালয়ে আগুন এবং কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে জনসাধারণের সেবাস্থল হাজীগঞ্জ পৌরসভা কার্যালয়কে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা হয়েছে।
এর আগে রোববার বেলা ১১টার দিকে হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল পাইলট হাই স্কুল এন্ড কলেজ ও হাজীগঞ্জ বাজারস্থ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের সামনে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী প্লাস্টিকের পাইপ, রড ও লাঠি-সোটা নিয়ে জড়ো হয়। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ও সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। যে সংঘর্ষ চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। এর মধ্যে রোববার বিকেলে পৌরসভায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়।
এদিকে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সোমবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত পৌরসভা কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়া ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এদিন সকালে আলীগঞ্জে বিএনপির কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয় এবং ভাংচুর করে। দুই দিনের হামলা ও সংঘর্ষে পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, ফায়ার কর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মী, পথচারীসহ প্রায় শতাধিক আহত হন।
এদিন সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যদের টহল দিতে দিয়ে গেছে। তবে সিএনজি, অটোরিকশা, মিশুকসহ ছোট যানবাহনগুলো চলাচল করছে। বন্ধ রয়েছে বড় যানবাহন।
সোমবার বিকেল ৩টার দিকে সবশেষ পরিস্থিতির বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক এবং আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
-এইচইউ/এমএ