For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

কোটা বিরোধী আন্দোলনে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত ৬

Published : Tuesday, 16 July, 2024 at 8:16 PM Count : 192

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। কোথাও কোথাও এখনো সংঘর্ষ চলছে। এসব সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ছয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এর মধ্যে চট্টগ্রামে তিনজন, ঢাকায় দুই জন ও রংপুরে একজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থী, একজন পথচারী এবং বাকি দুজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। 

চট্টগ্রাম
মঙ্গলবার বিকেল ৩টা থেকে নগরের মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট এবং ষোলশহরসহ আশেপাশের এলাকায় কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এর আগে দুপুর থেকে বিভিন্ন মোড়ে অবস্থা নেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা। দুই নম্বর গেট এলাকায় একটি বাস ভাঙচুর করে তারা। দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন।

নিহতরা হলেন, ওয়াসিম, ফয়সাল আহমেদ শান্ত ও ফারুক। এর মধ্যে ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজ শিক্ষার্থী। তিনি কক্সবাজারের পেকুয়া এলাকার বাসিন্দা। ফয়সাল আহমেদ শান্ত নগরের এমইএস কলেজের ছাত্র। পথচারীর ফারুকের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। 
তিনজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন।

ঢাকা
ঢাকা সিটি কলেজের পাশ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় মো. মনির (২৫) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি সংঘর্ষে মারা গেছেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

জানা গেছে, ওই যুবককে উদ্ধার করে প্রথমে পপুলার হাসপাতাল নেওয়া হয়। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন চালক আলী ও তার সহযোগী শাকিল।

এর আগে বিকেলে ঢাকা কলেজের বিপরীত পাশে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে অজ্ঞাতনামা এক যুবক (২৫) নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন এক পথচারী। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।

তিনি বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় এক যুবককে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার কানের নিচে ও মুখের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে আসা ওই পথচারী তার নাম পরিচয় বলতে পারেননি।

অজ্ঞাত ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী আকাশ মাহমুদ বলেন, আমরা তাকে ঢাকা কলেজের বিপরীত পাশে পেট্রোল পাম্পের সামনে পড়ে থাকতে দেখি। এরপর হাসপাতালে নিয়ে আসি।

রংপুর
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাইদ নিহত হন। আবু সাইদ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুরের বাসিন্দা মকবুল হোসেনের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেরোবির ইংরেজি বিভাগের প্রধান আসিফ আল মতিন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ দুপুর ২টায় রংপুর খামার মোড় থেকে শিক্ষার্থীরা বিশাল মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং ফটকের সামনে আসেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় পুলিশ প্রায় ২০০ রাউন্ড গুলি ও রাবার বুলেট ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাইদ নিহত হন।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’

প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তারা ধরে নিয়েছেন ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ তাদেরকেই বলা হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে রোববার মধ্যরাত থেকে আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

গতকাল সোমবার দুপুর থেকে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ। বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলা সংঘর্ষে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। রাত ১০টার পর আন্দোলনকারীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং সারা দেশের সব পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে তাদের সমর্থনে রাস্তায় নামার আহ্বান জানান।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে রাজধানীর ১৫-২০টি স্থানে একযোগে সড়ক অবরোধ শুরু করেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অবরোধে গোটা রাজধানী অচল হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়াসহ দেশের প্রায় সর্বত্র শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে এসেছেন। দুপুরের পর থেকে ঢাকার সায়েন্সল্যাব ও চানখারপুল এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়।

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকাসহ চার জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

এসআর

চট্টগ্রামে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষ: নিহত ২
কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী নিহত
ঢাকা কলেজ এলাকায় সংঘর্ষে নিহত ১

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,