মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠাতা আটক
Published : Monday, 24 June, 2024 at 11:22 AM Count : 210
জয়পুরহাটে চতুর্থ শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতাকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার বিকেলে জয়পুরহাট শহরের মাছুয়া বাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটককৃত আজিজুল হক ফেন্সি (৬০) পৌর এলাকার বিশ্বাসপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও শহরের কাশিয়াবাড়ি এলাকায় অবস্থিত হযরত ফাতেমা (রা.) কওমি হাফেজিয়া বালিকা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই মাদ্রাসাতে নওগাঁর ধামুইরহাট উপজেলার এক অসহায় শিক্ষার্থী চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। ঈদের ছুটি হলেও মাদ্রাসাতে বেতন বাকি থাকায় ওই শিক্ষার্থীকে ছুটি দেওয়া হয়নি মর্মে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে । ওই শিশু শিক্ষার্থীকে কৌশলে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আজিজুল হক ফেন্সির বিরুদ্ধে। রোববার মেয়েটি সুকৌশলে পালিয়ে মাদ্রাসার পাশে এক বান্ধবীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এ সময় ওই শিক্ষার্থী সব ঘটনা খুলে বলে তার বান্ধবীর বাবাকে। তিনি তাৎক্ষণিক ওই ছাত্রীকে জয়পুরহাট সদর থানায় নিয়ে যান। অভিযোগ পেয়েই পুলিশ থানার পূর্ব দিকে মাছুয়া বাজার থেকে আজিজুলকে আটক করে।
ভুক্তভোগী জানায়, আমি চতুর্থ শ্রেণিতে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করি। আমার বাবা সময়মতো মাদ্রাসার খরচের টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। এর মধ্যে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। আমার টাকা বাকি ছিল। বাড়ি গিয়ে যদি আর না আসি সে জন্য টাকা পরিশোধ না করে বাড়িতে যেতে দেয়নি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আজিজুল হক ফেন্সি। পরে তিনি আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। আমি তাকে বাবা ডেকেও রেহাই পাইনি। রোববার কৌশলে পালিয়ে গিয়ে মাদ্রাসার পাশে এক বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। বান্ধবীর বাবা আমার কাছ থেকে শোনার পর থানায় নিয়ে আসে। পুলিশকে বলেছি আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
আটকের আগ মুহুর্তে আজিজুল হক ফেন্সি কখনও বলেন তার ভুল হয়েছে। আবারও কখনও বলছেন তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক রুবেল হোসেন জানান, রোববার দুপুরের দিকে দু'জন মহিলা ও একজন পুরুষ ছোট এক মেয়েকে থানায় নিয়ে আসে। এরপর তাদের কাছ থেকে জানতে পারি শিশুটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়েছে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি শহরের কাশিয়াবাড়ি এলাকায় একটি বালিকা কওমি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আজিজুল হক ফেন্সি। তিনি ওই ছাত্রীর বেতন বাকি পরিশোধ না করা পর্যন্ত আটকে রেখে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। কয়েকদিন পর শিশুটি কৌশলে পালিয়ে গিয়ে এক বান্ধবীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আজিজুল হক ফেন্সিকে মাছুয়া বাজার এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। আটকের পর আজিজুল হক ফেন্সি প্রাথমিক পর্যায়ে জিজ্ঞাসাবাদে সে ভুল স্বীকার করে শিশুটিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি হুমায়ুন কবীর জানান, মেয়েটির মুখে বিষয়টি জানতে পেরেই তাৎক্ষণিক শহরের মাছুয়া বাজার এলাকা থেকে আজিজুল হক নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম জানান, এটি একটি সামাজিক ক্রাইম। এসব অপরাধীদের কোনো ভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। রোববার বিকেলে মেয়েটির বাবা বাদি হয়ে জয়পুরহাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
-এসআই/এমএ