For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

বিএসএমএমইউ'র বাজেট অনুমোদন

Published : Thursday, 20 June, 2024 at 3:57 PM Count : 260

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ১ হাজার ৫৪ কোটি ৩৩ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার বাজেট অনুমোদিত হয়েছে। গত বছর এই বাজেটের পরিমাণ ছিল ৭ শত ৮৪ কোটি ২০ লাখ। এ বছর বাজেটের আকার বৃদ্ধি পেয়েছে ২৭০ কোটি ১৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা বা ৩৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ২৬৪ কোটি ৬৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। 

বৃহস্পতিবার বিএসএমএমইউ'র শহীদ ডা. মিল্টন হলে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটর ৯২তম সভায় এই বাজেট অনুমোদিত হয়।  

সিন্ডিকেট সভায় বাজেট উপস্থাপন করেন বিএসএমএমইউ'র কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে নিয়োজিত উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।

বাজেটে জানানো হয়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য গবেষণাখাতে ৩০ কোটি ৭০ লাখ এবং প্রশিক্ষণ খাতে ৪ কোটি ৯০ লাখসহ গবেষণা ও প্রশিক্ষণে ৩৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাজেটে চিকিৎসা ও শৈল্য খাতে (এমএসআর) বরাদ্দ বৃদ্ধি করে ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মেধাবৃত্তি খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১২৩ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা। বাজেটে পূর্ত সংরক্ষণে ১৮ কোটি ৪০ লক্ষ, পণ্য সেবার উপখাত সমূহে ৮৭ কোটি ৩৯ লক্ষ ৬০ হাজার, যন্ত্রাংশ (মূলধন) উপখাতে ৪৪ কোটি ৫৮ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা খাতে ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। 
এছাড়া, বেতন বাবদ ২৭৫ কোটি ৬৫ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা, ভাতাদি বাবদ ২১৩ কোটি ২৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা এবং পেনশন মঞ্জুরী খাতে ৪৭ কোটি ৩৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাজেটে এ বছর স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ হতে সম্ভাব্য প্রাপ্য বরাদ্দের পরিমাণ ৬৮৩ কোটি ৭৪ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকা, শিক্ষা মন্ত্রণালয় (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন) হতে ২৪৫ কোটি ৫৮ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা এবং নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১২৫ কোটি টাকা।

বাজেট উপস্থাপনকালে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা, চিকিৎসা ও গবেষণা এই তিন ক্ষেত্রকে সর্বাত্মক গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। চাহিদার তুলনায় বাজেট প্রাপ্তির স্বল্পতা থাকলেও এই প্রাপ্ত বাজেট এবং নিজস্ব আয় দিয়ে মানসম্মত ও সাশ্রয়ী চিকিৎসা সেবা, গুণগত স্বাস্থ্য শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে বিশ্বমানের মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বপ্ন হলো ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করা। এই স্বপ্ন পূরণে দেশের ক্রমবর্ধমান জনগণকে স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের দিকে লক্ষ্য রেখে এবারের বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে। 

ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান তার বক্তব্যে বিনামূল্যে জন্মগত শিশু হৃদরোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া, প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে দরিদ্র রোগীদের আর্থিক সাহায্য প্রদান, অটোমেশন কার্যকম, গবেষণার জন্য জেনোম সিকোয়েন্সিং ল্যাব প্রতিষ্ঠা, অনলাইনে রিপোর্ট প্রদানসহ ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিসঅর্ডার এন্ড অটিজম (ইপনা) ও বিভিন্ন বিভাগের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম তুলে ধরেন।   

সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, মহান স্বাধীনতা যুুদ্ধের ও ১৫ আগস্টের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। উপাচার্য তার বক্তব্যে তাকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়ায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। 

সিন্ডিকেটের সকল সদস্যকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উপাচার্য বলেন, বিএসএমএমইউ জার্নালের নতুন কমিটি গঠন ও জার্নালের উন্নয়নে নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নাল স্কোপাস ইনডেক্সের স্বীকৃতি পাওয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ভাবে সাফল্য অর্জন করেছে। যা সমগ্র দেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের ও সম্মানের। বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালকে বায়োমেডিক্যাল ও জীববিজ্ঞান জার্নালের সংরক্ষণাগার “পাবমেড” এর রিকোগনিশন অর্জনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে। দক্ষতা ও মানবৃদ্ধিসহ গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে কোলাবরেশন জোরদার করা হয়েছে। এসবের একটাই লক্ষ্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের বুকে অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠা করা বা সমগ্র বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তোলা। 

বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীদের মাসিক বৃত্তি ২৫ হাজার টাকা প্রদান করা হচ্ছে। স্নাতকোত্তর ছাত্র-ছাত্রীদের থিসিস গ্রান্ট হিসেবে টাকা প্রদান করা হচ্ছে। রেসিডেন্সি কোর্স হল সম্পূর্ণ আবাসিক স্নাতকোত্তর শিক্ষা ব্যবস্থা। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কোনো আবাসিক হল নেই। চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্সদের আবাসিক ব্যবস্থা নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পৃথক দুটি আবাসিক হল নির্মাণ এবং কর্মরত জনবলের জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ৪৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন। 

সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল সম্পর্কে তিনি বলেন, এই হাসপাতাল পুরোপুরি চালু করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। স্বপ্নের এই হাসপাতালটি বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনবল দিয়ে প্রতিটি কার্যক্রম সীমিত ভাবে চালু আছে। এই হাসপাতালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট অনুমোদিত প্রস্তাবিত নতুন জনবল দুই হাজার ৭৫৮ জন যা এখন পর্যন্ত জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক মঞ্জুর হয়নি। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল পরিচালনার আইনি কাঠামো নির্ধারণের জন্যে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। 

রোগীদের সেবার মানোন্নয়নে কার্যক্রম সম্পর্কে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের আমলে মুমূর্ষু শিশু রোগীদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ২০ বেডের পিআইসিইউ চালুর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এইচডিইউ'র আধুনিকায়নসহ পুরোপুরি চালু করা হয়েছে। কেবিন ব্লক এবং সি ব্লকে রোগীদের সেবাবান্ধব একটি করে উন্নতমানের ইনডোর ফার্মেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালুর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ডি ব্লকে একটি কার্ডিয়াক স্টেন্ট (রিং) সেন্টার ও একটি অর্থোপেডিক প্রোস্থেসিস সেন্টার চালুর বিষয়টি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।  

সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সদস্য আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএমআরসি'র চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, সংসদ সদস্য আ ফ ম রুহুল হক, সংসদ সদস্য অধ্যাপক মো. আব্দুল আজিজ, সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নুর, ইউজির সদস্য ও চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর, বিএমডিসির সভাপতি অধ্যাপক মাহমুদ হাসান, বিসিপিএস'র সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন)  অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, ডিন অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, ডিন অধ্যাপক ডা. মানিক কুমার তালুকদার, ডিন অধ্যাপক ডা. আহমেদ আবু সালেহ, ডিন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কে এম জাহিদ হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক ডা. কৃষ্ণা রানী মজুমদার, গাইনোকোলিজক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শিরিন আক্তার বেগম, পপুলার মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ডা. কোহিনুর বেগম, অতিরিক্ত সচিব ড. রনজিত কুমার সরকার, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল, অতিরিক্ত সচিব মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার, বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্ট এর সভাপতি ওমর ফারুক, আমন্ত্রিত সদস্য প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমিরেটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. রেজাউর রহমান, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) গৌর কুমার মিত্র প্রমুখ।  

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,