For English Version
রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪
হোম

কৃষকের জমিতে সেচ দিচ্ছেন না কমিটির প্রভাবশালী সভাপতি

Published : Saturday, 16 March, 2024 at 7:56 PM Count : 651


গভীর নলকূপের সক্ষমতা আছে। তাই কৃষকদের জন্য নতুন করে গভীর নলকূপ থেকে জমি পর্যন্ত নালাও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এ কারণেই আনোয়ার, চয়ন, বাবুল, ময়নালেরা স্বপ্ন দেখেছিলেন জমিতে ফলাবেন সোনালি ধান। সেই ধান থেকে হাতে টাকা আসবে; সংসারের অভাব মিটবে।

কিন্তু তাঁদের সেই স্বপ্ন এবার ধূসর হতে বসেছে। কারণ, গভীর নলকূপ পরিচালনা কমিটির প্রভাবশালী সভাপতি তাঁদের সেচের পানিই দিতে চান না। কৃষকেরা যে আশায় বুক বেঁধেছিলেন, তাতে রঙের ছটা নেই। কৃষকের মনে উদ্বেগ।

এই কৃষকদের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায়। দুর্গাপুর পৌরসভার রইপাড়া সরকারপাড়া মাঠে তাঁদের জমি। এই মাঠে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপ আছে। এর আওতায় ১৫০ বিঘা বোরো ধানের জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব। কিন্তু চাষ হতো ১০০ বিঘার মতো। এরই মধ্যে বেশ কিছু জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে। তাই বোরো ধানের জমি কমেছে। এ অবস্থায় ধানের জমি বাড়াতে সম্প্রতি বিএমডিএ গভীর নলকূপ থেকে মাটির নিচ দিয়ে নালা সম্প্রসারণ করেছে। এখন আরও প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব।
কিন্তু বেঁকে বসেছেন গভীর নলকূপ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আলাউদ্দিন। নতুন জমিতে তিনি সেচ দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। অথচ এবার গভীর নলকূপের পানিতে বোরো ধানের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন এই কৃষকেরা। তাঁরা বোরো ধানের চারাও তৈরি করেছেন। জমিতে লাগাতে কেউ কেউ চারা তুলেও ফেলেছেন। এখন জমিতে পানি পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী কৃষকদের পক্ষ থেকে বিএমডিএয়ের দুর্গাপুর কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তারপরও বিষয়টির সুরাহা হয়নি। গত শুক্রবার পর্যন্ত চাষিরা পানি পাননি।

মাঠের কৃষকেরা বলেন, বিএমডিএয়ের গভীর নলকূপ থেকে জমি পর্যন্ত নালা ছিল না বলে এতোদিন তাঁরা বোরো ধান চাষ করতে পারতেন না। শাক-সবজি চাষ করতেন দূর থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি এনে। এভাবে ধান চাষ সম্ভব নয়। এবার তাঁদের পানি দেওয়ার কথা বলে নালা সম্প্রসারণ করা হয়। এর জন্য কৃষকেরা ২০ হাজার টাকাও দিয়েছেন। কিন্তু নালার কাজ শেষে এখন গভীর নলকূপের অপারেটর বুদন আলী ও সভাপতি আলাউদ্দিন পানি দিতে চাচ্ছেন না।

মাঠে ১৫ কাঠা জমি আছে কৃষক শাহাদ আলীর। তিনি বলেন, আমার আর অন্য কোথাও কোনো জমি নাই। এইটুকুই জমি, সেখানে এতোদিন ধান হয়নি পানির অভাবে। শুধু শাক-সবজি করেছি। এখনো পেঁয়াজ আছে। কদিনের মধ্যে পেঁয়াজ উঠবে। তারপর ধান করব ভেবেছিলাম। আশা ছিল, এবার কিছুদিন ঘরের ধানের ভাত খাব। কিন্তু এখন তো পানিই দিতে চাচ্ছে না।

এলাকার স্কুলশিক্ষক হাফিজুর রহমানের দুই বিঘা জমি আছে ওই মাঠে। তিনি বলেন, প্রায় ৫০ জন কৃষকের ৫০ বিঘা জমি ধান চাষের আওতায় আনতেই নতুন করে প্রায় ২০০ ফুট নালা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এখন এই ৫০ বিঘা জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব। কিন্তু কমিটির সভাপতি পানি দিতে চাচ্ছেন না। কেন পানি দেবেন না সেটাও তিনি বলছেন না।

হাফিজুর রহমান বলেন, দুই বিঘা জমিতে ধান করতে আমি নিজেই এবার বীজতলা করে চারা করেছি। সকালে চারা তুলেও নিয়েছি। এখন নালার মুখ ছেড়ে জমিতে পানি দিয়ে কাদা করে চারা লাগানোর কথা। কিন্তু তিনি পানি দিতে চাচ্ছেন না। পানি না দিলে আমার তোলা চারা নষ্ট হয়ে যাবে।

জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে সভাপতি মো. আলাউদ্দিন বলেন, পানি দেওয়া হবে না, তা ঠিক না। পানি দেওয়া হবে। এতোদিন ডিপ (গভীর নলকূপ) বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ডিপ চালু করা হয়েছে। নতুন আরও ৫০ বিঘা জমিতে ধানে পানি দেওয়ার সক্ষমতা এই ডিপের আছে। পানি দেওয়া হবে। কিন্তু কোন কৃষক অভিযোগ করেছে, তা আমি জানি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএমডিএয়ের দুর্গাপুর কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী আজমল হক বলেন, ‘নতুন জমিতে সেচ দেওয়ার জন্যই নালা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। কিন্তু ওখানে সভাপতির সঙ্গে কোনো কৃষকের হয়তো ব্যক্তিগত বিরোধ আছে। সে জন্য তিনি পানি দেননি। কিন্তু পানি না দিয়ে উপায় নেই। একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমি লোক পাঠিয়ে সমস্যার সমাধান করে দেব।

আরএইচ/এমবি


« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,   [ABOUT US]     [CONTACT US]   [AD RATE]   Developed & Maintenance by i2soft