পানি ছাড়া স্বাভাবিক জীবন কল্পনা করা যায়না। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নয়টি আদিবাসী গ্রামে বিশুদ্ধ পানীয় জলের কষ্ট লাঘোব হচ্ছে না।
তাদের কষ্ট এখন চরম আকার ধারণ করেছে। বাধ্য হয়ে পাহাড়ি ছড়ার ঘোলা পানি, ঝর্ণা, কুয়ো বা ইন্দরার ময়লা পানি পান করতে হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্ভোগের শিকার বাসিন্দারা জানান, ভারতীয় সীমান্তবর্তী আদিবাসী অধ্যুষিত গোপালপুর, দাহাপাড়া, থাউসালপাড়া, ভবানীপুর, ফান্দা, বারোমারী, লক্ষিপুর গ্রামসহ অন্যান্য পাড়ায় আদিবাসীদের জন্য সরকারি ভাবে কোন টিউবওয়েল কিংবা গভীর কুয়ো তৈরী করে না দেয়ায় তাদের ভাগ্যে জুটছে না বিশুদ্ধ পানি।
সারাদেশে উন্নয়নের জোয়ার বইলেও সীমান্তবর্তী আদিবাসী গ্রাম গুলোতে নেই কোন উন্নয়নের ছোঁয়া। গ্রামে দু‘এক জন অধিক অর্থ ব্যায় করে টিউবওয়েল বসালেও নীচে পাথর থাকায় কিছুদিন পানি দিলেও পরবর্তিতে বন্ধ হয়ে যায়।
ওই গ্রাম গুলোতে হত-দরিদ্র সুবিধা বঞ্চিত লোকজনের সংখ্যা অনেক বেশি থাকায় তাদের পক্ষে টিউবওয়েল বসানো কিংবা গভীর কুঁয়ো তৈরী করা সম্ভব হচ্ছেনা। বিধায় দিনের পর দিন বাধ্য হয়েই ঝর্ণা, কুয়ো বা ইন্দরার ময়লা পানি পান করতে হচ্ছে তাদের।
বিশুদ্ধ পানীয় জলের দুভোর্গের কথা বলতে স্থানীয়রা জানান, কোন কোন সময় অন্য গ্রাম থেকেও বিশুদ্ধ খাবার পানি কাঁধে করে বয়ে এনে পান করতে হয়। গ্রামের কয়েকটি স্বচ্ছল পরিবারের লোকজন অধিক অর্থ ব্যায় করে টিউবওয়েল বসিয়েছেন কিন্তু সেগুলোতেও আসছে চৈত্র মাসে পানি থাকবে না, যদি থাকেও তাতে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত আয়রণ।
অপরদিকে হত-দরিদ্র পরিবারগুলো বেশ কয়েক গতবছর নিজেরা চাঁদা দিয়ে বন বিভাগের টিলার নিচে চাঁকটি বসিয়ে কুঁয়ো তৈরী করে খাবার পানি সংগ্রহ করলেও শুকনো মৌসুমে ওই কুয়োতে পানি থাকে না।
দুর্গাপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাদেকুল ইসলামের বলেন, সীমান্তবর্তী আদিবাসী গ্রাম গুলোতে টিউবওয়েল বসাতে হলে পাথর সরিয়ে প্রায় সাত আটশ ফুট গভীর নলকুপ বসাতে হবে, তাতে খরচ হবে প্রায় ২০-৩০ লক্ষ টাকা। মাটির নিচ থেকে পাথর সরিয়ে যদি বিকল্প হিসাবে গভীর কুঁয়ো বসানো যায় তাহলেও আদিবাসীদের সু-পেয় পানির সমস্যা দূর হবে। এ ব্যপারে এমপি মহোদয়ের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম রকিবুল হাসান বলেন, আমি যদিও অত্র উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি। এনিয়ে জনস্বাস্থ্য দপ্তর সুত্রে জানতে পেরেছি কিছু এলাকায় গভীর নলকুপ বসানো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আদিবাসী গ্রাম গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে অতি দ্রুতসময়ের মধ্যে অ-গভীর নলকুপ বা রিংওয়েল বসিয়ে সু-পেয় পানির ব্যবস্থা করা হবে।
টিএইচ/এমবি