For English Version
মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪
হোম

বেরইল গ্রামের মানুষের জীবিকা চলে খলসানি তৈরি করে

Published : Monday, 19 August, 2019 at 5:50 PM Count : 480

মাছ ধরার বিশেষ যন্ত্র ঢেউল বা চাঁই তৈরী (স্থানিয় নাম খলসানি) করে শত বছর ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন জয়পুরহাট সদরের বেড়ইল গ্রামের প্রায় সাড়ে ৩শ পরিবার। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন হাট-বাজারে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বছরের ৬ মাস তাদের ব্যবসা ভাল চললেও বাকি ছয় মাস অভাব-অনটনে কাটে তাদের সময়। তারপরও বাপ-দাদার এ পেশাকে জীবিকার তাগিদে আজও আঁকড়ে ধরে আছেন ওই গ্রামের খেটে খাওয়া পরিবারগুলো।    

বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই বাঁশের তৈরি খলসানির চাহিদা তুলনামূলক বেড়ে যায়। সে কারণে জেলার বেরইল গ্রামের নারী-পুরুষ ও শিশুরা এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বাঁশের তৈরী মাছ ধরার বিশেষ এক ধরনের ফাঁদ খলসানি বানানোর কাজে। স্থানীয়ভাবে এর নাম খলসানি হলেও কোথাও কোথাও চাঁই বা ঢেউল নামেও পরিচিত এই যন্ত্রটির। বর্ষা শুরুর পর থেকে মাঠ-ঘাটে পানি থাকা বিশেষ করে জৈষ্ঠ থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত খলসানি বিক্রি থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে আনন্দে দিন কাটে তাদের। কিন্তু বছরের বাকি ৬ মাস অন্য কাজ করে কোন মতে সংসার চালাতে হয় বলে জানালেন বেরইল গ্রামের খলসানি তৈরি কারক ও বিক্রেতা রবীন চন্দ্র। আবার বাঁশের দাম বৃদ্ধি পেলেও সেই তুলনায় খলসানির দাম বাড়েনি বলেও জানান তিনি।
একসময় জেলার বিভিন্ন খাল-বিল, নদী-নালা, পুকুর-দিঘী ও ধানক্ষেত পানিতে পরিপূর্ণ থাকায় বাঁশের তৈরি মাছ ধরার এই বিশেষ ধরনের যন্ত্র খলসানির ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এখন আর সে অবস্থায় নেই। সে স্থান দখল করে নিয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির কারেন্ট জাল। ফলে হাট-বাজারে খলসানির আমদানির তুলনায় বেঁচা-বিক্রি কম বলে জানালেন খলসানি বিক্রেতা মোকলেছার রহমান। তবে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন হাট-বাজারে এখানকার তেরি খলসানির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিদিন পরিবারের সকলেই মিলে ৪/৫টি খলসানি তৈরি করা সম্ভব হয়ে থাকে। বাজারে এখন প্রতি পিস খলসানি বিক্রি হচ্ছে ছোটগুলো ১৫০ টাকা আর বড় গুলো প্রকার ভেদে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। জেলা শহরের নতুনহাটে শনিবার ও বুধবারে দুপুরের পরে এই খলসানির হাট বসে। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পাইকাররা এখান থেকে খলসানি কিনে নিয়ে যায়।

রুচির পরিবর্তন আর যান্ত্রিকতার দাপটের পরেও এই হস্তশিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য শত বছরের পুরনো বাপ-দাদার এ পেশাকে আঁকরে ধরে বাঁচার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বেরইল গ্রামের এই দরিদ্র পরিবার গুলো। সরকারি-বেসরকারি পর্যায় থেকে প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগীতা বা ঋণের সুবিধা পেলে তাদের এ পৈত্রিক ব্যবসাকে আরো সম্প্রসারণ করা সম্ভব হতো বলে জানান, বেরইল গ্রামের খলসানি তৈরি কারক অরুন চন্দ্র।

সরকারী-বেসরকারী পৃষ্টপোষকতা পেলে একদিকে যেমন রক্ষা পাবে এই নান্দনিকতাপূর্ণ হস্তশিল্পটি অন্যদিকে খলসানী তৈরীর কারিগররা খুঁজে পাবে স্বাবলম্বী হবার পথ, এমন প্রত্যাশা করছেন বেরইল গ্রামের এই দরিদ্র পরিবারগুলোর।

এমএস/এইচএস

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,   [ABOUT US]     [CONTACT US]   [AD RATE]   Developed & Maintenance by i2soft