আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে পর্যাপ্ত গরু আসতে শুরু করলেও ক্রেতার সংখ্যা কম। আগামী শুক্রবার থেকে পশুর হাটে বেচাকেনা জমে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজধানীর কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটগুলোতে সারাদেশ থেকে গরু আসতে শুরু করেছে। নির্ধারিত স্থানে গরু বেঁধে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছেন বিক্রেতারা। হাটে পর্যাপ্ত গরু থাকলেও ক্রেতার সংখ্যা কম। অল্প কিছু ক্রেতা হাটে ঘোরাঘুরি করলেও দাম শুনেই ক্ষান্ত থাকছেন তারা।
বিক্রেতারা বলছেন, হাটে এখন ক্রেতার থেকে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি। আশা করছি আগামী শুক্রবার থেকে হাট জমে উঠবে।
এবারের হাটে ছোট গরুর দাম হাকা হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা, মাঝারি গরু এক লাখের ওপরে এবং বড় গরুর আকার ও সৈন্দর্য্যের ওপর দাম হাকা হচ্ছে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা।
ফরিদপুর থেকে গত সোমবার রাজধানীর কমলাপুর স্টেডিয়ামের পাশে পশুর হাটে ২০টি গরু নিয়ে এসেছেন শেখ নুরু। তিনি প্রত্যেকটি গরুর দাম রেখেছেন ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।
অবজারভার অনলাইনকে তিনি বলেন, 'এখনও কোন গরু বিক্রি হয়নি। ক্রেতারা যারা আসছেন দাম শুনেই চলে যাচ্ছেন। আর দুই/একদিন পর থেকে হাটে ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে।'
ঝিনাইদহ থেকে নিজের পালা গরু নিয়ে এসেছেন মো. রেজাউল। প্রতি বছরই নিজের একটি পালা গরু ঢাকায় এনে কোরবানির হাটে বিক্রি করেন তিনি। তার সঙ্গে একই এলাকার আরও ১২ জন ১২টি গরু নিয়ে এসেছেন। তার গরুর দাম রেখেছেন ৪ লাখ টাকা।
রেজাউল বলেন, 'এখন পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকা দাম বলেছে। আমি চেয়েছি ৪ লাখ। তবে সাড়ে তিন লাখ হলে বিক্রি করবো।'
গরু দেরিতে বিক্রি হয় জেনেও আগেই হাটে আসার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিক্রেতারা বলেন, হাটে দেরিতে আসলে ভালো জায়গা পাওয়া যায় না। তখন গরু বিক্রি করতে ঝামেলা হয়। ভালো জায়গায় গরু নিয়ে দাঁড়ালে বেশি ক্রেতার নজরে পড়ে। এতে দামও ভালো পাওয়া যায়। তাই হাট জমে উঠার আগেই আসা।
শেখ নুরু, রেজাউলের মতো অনেকেই রাজধানীর হাটগুলোতে গরু বিক্রি করতে এনেছেন। সকল বিক্রেতাই ক্রেতার অপেক্ষায় আছেন।
এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, 'এখনও ঈদের অনেক সময় থাকায় বিক্রেতারা দাম বেশি চাচ্ছে। সুবিধামত দামে গরু কিনতে পারছি না।'
তিনি বলেন, 'ঢাকায় গরু রাখার জায়গার অভাবে কেউ আগে গরু কিনতে চায় না। অনেকেই ঈদের আগের রাতে গরু কেনে। আর প্রথম পর্যায়ে বিক্রেতারা গরুর দাম ছাড়তে চায় না। অনেক ক্রেতা বাধ্য হয়েই ঈদের আগের রাতে গরু কেনে।'
গোপীবাগ, কমলাপুরের বালুর মাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়াম মাঠ সংলগ্ন হাটের ইজারাদারদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, হাটে কেবল গরু আসতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার থেকে গরুর বাজার জমে উঠবে। এখন হাটে তেমন ক্রেতা নেই। গরু বিক্রিও কম।'
এদিকে, গরুর হাটগুলোতে তিন স্তরের নিরাপত্তার পাশাপাশি জাল নোট সনাক্তকরণ মেশিন এবং বৃষ্টিকে মাথায় রেখে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জনদুর্ভোগ ও যানজটের কথা চিন্তা করে এবার নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে রাস্তায় হাট বসালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানিয়েছে দুই সিটি কর্পোরেশন।
-এমএ