ব্যাপারী-দালালদের দখলে কোরবানীর হাট
Published : Sunday, 4 August, 2019 at 12:38 PM Count : 525
বগুড়ার মহাস্থান হাট এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় পশুর হাট। মহাস্থান হাটে কোরবানীর গরু, ছাগল উঠেছে প্রচুর। হাটে কোরবানির পশু উঠলেও ক্রেতাদের তেমন একটা ভিড় নেই। তবে মহাস্থান হাট পাইকারি (ব্যাপারী) ক্রেতা ও দালালদের দখলে।
আগাম পশু সংগ্রহ করতে হাটে ভিড় করছে পাইকাররা। ঢাকা-চট্ট্রগ্রাম-সিলেটসহ দেশের বড় বড় শহর থেকে ব্যাপারীরা আসছে বগুড়ার হাটে হাটে। দুই-এক দিনের মধ্যে শহরের কোরবানী দাতার হাটে আসবেন। দাম কম বলায় খামারীরা বেশি দামের আশায় ব্যাপারীদের কাছে গরু বিক্রি করছেন না।
পশু বিক্রেতার জানান, কোরবানির পশুর দাম স্বাভাবিক। তবে বেশি দামে গো-খাদ্য কিনে গরু লালন পালন করে খরচ গত বছরের চেয়ে বেশি হয়েছে। এর মধ্যে মিয়ানমার থেকে গরু আসার কথা শুনে আতংকে রয়েছেন বগুড়ার খামারিরা। মিয়ানমার ও ভারত থেকে গরু এলে রা গরুর ন্যায্য দাম পাবেন না।
মহাস্থান হাটে গাইবান্ধার কাটাখালি এলাকার আব্দুল মান্নানের প্রায় ৬ মণ ওজনের গরুর দাম ক্রেতারা বলছেন ১ লাখ ৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা। এই বিক্রেতা বলেন, তিনি গরুটি ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে চান। তবে কেউ দাম বলছেন না। বেপারীরা গরু কিনতে খামারীদের খামারে খামারে যাচ্ছে। এই সব ব্যাপারীরা খামারীদের কাঙ্খিত দাম বলছেন না। প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম না পেলে গরু ফিরে নিয়ে যাবেন বলে জানান খামারীরা।
বিক্রেতারা জানান, ঈদের ৪/৫ দিন আগে কোরবানি দাতারা হাটে এলে বেশি দাম পাওয়ার আশা করছেন তারা।
বগুড়া সদরের শাখারিয়া ইউনিয়নের গরু বিক্রেতা আব্দুল জোব্বার জানান, গত বছর দেশের বাইর থেকে গরু আমদানী না হওয়ায় ন্যায্য মূল্য পেয়েছি। এবার ভাল দাম পাবার জন্য উৎসাহিত হয়ে নতুন নতুন গো-খামার গড়ে উঠেছে। জেলার ২৭ হাজার খামারি (২৬ হাজার ৯শ’ ৩০) কোরবানীর হাটকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। বগুড়ায় কোরবানীর জন্য পশুর চাহিদা ৩ লাখ ২৬ হাজার ৪৭০টি হলেও গরু, ছাগল ও ভেড়া পালন হয়েছে প্রায় পৌনে ৪ লাখ। গত বছর গরু উদ্বৃত থাকায় বগুড়ার হাটগুলোতে চট্টগ্রাম-সিলেট-রংপুরের ব্যবসায়ীদের গরু ক্রয় করতে দেখা গেছে।
চাহিদার তুলনায় পালন বেশি হওয়ায় এবারও জেলার বাইরের পাইকাররা গবাদি পশু কিনতে বগুড়ায় ভীড় করবে বলে জানান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রফিকুল ইসলাম তালুকদার।
তিনি বলেন, বাইরে থেকে গরু দেশের অভ্যন্তরে না এলে দেশের খামারীরা এবারও ভাল দাম পাবে। এ বছর গরু ২ লাখ ৯৩ হাজার ৬২টি, মহিষ ২ হাজার ৪৮টি, ছাগল দেড় লক্ষাধিক, ভেড়া সাড়ে ২৬ হাজার নিয়ে মোট গবাদিপশু রয়েছে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৮০৮টি। মোট খামারী রয়েছে ২৬ হাজার ৯৩০ জন। বগুড়ায় কোরবানীর পশুর চাহিদা প্রায় ৩ লাখ ৩৫ হাজার। গত বছর কোরবানী দেয়ার সংখ্যা ছিল সব মিলিয়ে প্রায় ৩ লাখ ২৬ হাজার ৪০৫টি।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, জেলায় চাহিদার তুলনায় বেশি পশু লালন পালন হয়েছে। বাড়তি পশুগুলো বিভিন্ন জেলায় চলে যায়। হাটগুলোতে সামনে ক্রেতাদের ভীড় বাড়বে। আগে কোরবানীর পশু কিনে তা রাখার মত জায়গা না থাকায় ঈদের ২/৩ আগে কোরবানীর পশু কিনে থাকেন স্থানীয় ক্রেতারা।
-এমএ/এমএ