For English Version
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
হোম

নোয়াখালীর ভূমি অফিসগুলো এখন দুর্নীতির আখড়া

Published : Sunday, 30 June, 2019 at 6:46 PM Count : 706

নোয়াখালীর ভূমি অফিসগুলো এখন দুর্নীতির আখড়া

নোয়াখালীর ভূমি অফিসগুলো এখন দুর্নীতির আখড়া

নোয়াখালীর ভূমি অফিসগুলোতে দুর্নীতি ও হয়রানি সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। ঘুষ ছাড়া ভূমি অফিসে কোন সেবা পাওয়া যায় না। এখানকার প্রায় ভূমি অফিসে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যের কাছে সেবাপ্রার্থীরা রীতিমতো জিম্মি হয়ে পড়েছেন। 

ইউনিয়ন থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলা ভূমি অফিসগুলো এখন দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। কোথাও কোন অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার নেই। 

সূত্র জানায়, সম্প্রতি দেশের জেলাগুলোতে সরকারি সেবাদানকারী অফিস এবং প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধে দুদকের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকদের যে চিঠি দেয়া হচ্ছে তার মধ্যে ভূমি অফিসগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এরপরও দুর্নীতি-জালিয়াতি বন্ধ হচ্ছে না। 

দুদকের ভূমি অফিস দুর্নীতি সংক্রান্ত বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ভূমি রেজিস্ট্রেশন, নামজারি, ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি কর, ভূমি রেকর্ড, খাস জমি, পরিত্যক্ত ও অর্পিত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ টাকা ছাড়া কোন সেবা পায় না।
বিভিন্ন সময়ে এমন অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পেয়েছে দুদক। এসব ক্ষেত্রে ঘুষ ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হলেও কারও বিরুদ্ধে স্থায়ী কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।  এক অফিস থেকে শাস্তিমূলক বদলি করলেও ওই অসাধু কর্মকর্তারা নতুন অফিসে আগের মতোই ঘুষ ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।  অনেকে বছরের পর বছর একই অফিসে চাকরি করে অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছে।

দুদকের প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ভূমি অফিসগুলোতে সবচেয়ে বেশি জালিয়াতির ঘটনা ঘটে নামজারি, ভূমি রেজিস্ট্রেশন, ভূমি অধিগ্রহণ, সরকারি খাস জমি, পরিত্যক্ত জমি এবং অর্পিত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে।  নামজারিতে ঘুষ লেনদেন ওপেন সিক্রেট।  ঘুষ ছাড়া কোন নামজারি হয় না।  এ ঘুষের সঙ্গে দালাল থেকে শুরু করে পদস্থ কর্মকর্তাদের একটি অংশ জড়িত। 

অফিসের পিয়ন ও দালালদের মাধ্যম ছাড়া ভুক্তভোগীরা নামজারি করতে পারেন না। যারা টাকা দিতে চান না তাদের নামজারিতে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। ভূমি রেজিস্ট্রেশনেও জালিয়াতি করা হয়। জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি জমি যে কারো নামে এবং একজনের জমি অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করে দেয়া হয়।  শুধু তাই নয়, ব্যক্তি মালিকীয় এবং আদালতের ডিক্রিপ্রাপ্ত জমিও তহসিল অফিসগুলোর মাধ্যমে বন্দোবস্ত হয়ে চলছে। যা স্পষ্টত আদালত অবমাননার শামিল। 

এসব ক্ষেত্রে ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তারা জড়িত। ভূমি কর ঠিকমতো আদায় হয় না। বছরের পর বছর কর আদায় না করে কর্মকর্তারা ঘুষসহ নানা জালিয়াতির মাধ্যমে কর ফাঁকিবাজদের সহযোগিতা করে। 

জানা যায়, কোন কোন ক্ষেত্রে কর আদায় না করে জালিয়াতির মাধ্যমে তা মওকুফ দেখানো হয়। ভূমি রেকর্ড টাকা ছাড়া হয় না। এসব জালিয়াতি নিয়ে দুদকে প্রায়ই অভিযোগ আসে। 

দুদক সূত্রে জানা যায়, খাস, পরিত্যক্ত এবং অর্পিত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে। টাকার বিনিময়ে ভূমি কর্মকর্তা সরকারি খাস জমি যে কারও নামে বন্দোবস্ত দিচ্ছে। 

একই ব্যক্তিকে বারবার বন্দোবস্ত দিচ্ছে।  একাধিকবার বন্দোবস্ত নিয়ে ওসব জমিতে বহুতল ভবনও তৈরি করছে বন্দোবস্ত নেয়া ব্যক্তিরা।  অনেক পরিত্যক্ত জমি বছরের পর বছর বেদখলে থাকলেও সেগুলো উদ্ধারে ভূমি অফিসের কোন উদ্যোগ নেই।  জালিয়াতি করে অর্পিত সম্পত্তির নথিপত্র গায়েব করার অভিযোগও রয়েছে। 

অভিযোগ রয়েছে, নোয়াখালীর প্রায় ভূমি অফিসের তহসিলদাররা পারেননা এমন কোন অপকর্ম নেই।  আর এসব করে অনেক তহসিলদার কোটি-কোটি টাকার মালিকও হয়েছেন। এমনই একজন বেগমগঞ্জের  বোরহান উদ্দিন।  ২০১৭ সালে বেগমগঞ্জে পুনঃনিয়োগ পাওয়ার পর মাত্র আড়াই বছরের তিনি কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছেন। এসময় আলিসান বাড়ি, দামি গাড়ি ও বিভিন্ন জায়গায় প্লাট ও ফ্লট রয়েছে বলে জানা গেছে।  এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে তার একাধিক মৎস্য ঘের।

এব্যাপারে বেগমগঞ্জের ভূমি অফিসের তহসিলদার বোরহানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এগুলো ভুয়া কথা, এ ব্যাপারে আপনার সঙ্গে আমি ফোন দিয়ে পরে কথা বলবো।”

এদিকে নোয়াখালী দুদক সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ভূমি অফিসে অভিযান চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। বিশেষ করে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের ভূমি অফিসগুলোতে ব্যাপক জালিয়াতি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ জমা পড়ছে। অভিযোগ পেয়ে দুদক নিয়মিত অভিযান চালিয়ে অনিয়ম প্রতিহত করতে সুপারিশ করছে সংশ্লিষ্ট মহলে। কিন্ত এরপরও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হলেও কিছুদিন পর আবার ‘যেই সেই’।

এমআরএম/এইচএস

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,   [ABOUT US]     [CONTACT US]   [AD RATE]   Developed & Maintenance by i2soft