For English Version
শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
হোম

বেরোবির প্রশাসনিক কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

Published : Sunday, 30 June, 2019 at 1:06 PM Count : 629

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক অনিয়ম, সরকারি অর্থের অপব্যবহার, অগ্রিম উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা অপচয়সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। ১০ ধরনের অনিয়মের অভিযোগ সম্বলিত প্রতিবেদন প্রদান করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক রেজাউল করিম হাওলাদার সম্প্রতি এ প্রতিবেদন প্রদান করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল বাজেটের কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষাকালে এসব অনিয়ম ধরা পড়ে বলে জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ব্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে অগ্রিম নিয়ে করা হয় এবং অগ্রিম নেয়া অর্থ খরচ করার পূর্বেই খাতভিত্তিক ব্যায় দেখানো হয়। ফলে খাতের সঠিক তথ্য পরীক্ষা- নিরীক্ষাকালে পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। শুধু তাই নয় এসব অগ্রিম অর্থ উত্তোলনের কোন রেজিস্টার নেই। সে কারণে অগ্রিম অর্থ নেবার জন্য আলাদা রেজিস্টার ও যথা সময়ে অগ্রিম নেয়া অর্থ সমন্বয় করার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও হিসাব দফতরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যেকোনো অনুষ্ঠান কিংবা কাজের জন্য তথাকথিত কমিটির নামে অগ্রিম অর্থ উত্তোলন করে বাহুল্য ব্যায় দেখানো হয়। গত দু’বছরে শুধুমাত্র অগ্রিম অর্থ উত্তোলনের নামে কয়েক কোটি টাকা নয়-ছয় করার অভিযোগ রয়েছে। অগ্রিম অর্থ গ্রহণ করার পর প্রয়োজনীয় ভাউচার দেয়ার নামে জোড়াতালি দিয়ে বিষয়টি সমন্বয় করা হয়।

সূত্র আরও জানায়, উপাচার্যের কাছের কয়েকজন শিক্ষক, কর্মকর্তা বেশিরভাগ অর্থ অগ্রিম হিসেবে উত্তোলন করেছেন। এসব অগ্রিম অর্থ উত্তোলনের বিষয়টি তদন্ত করলে দায়ীদের মুখোশ উন্মোচিত হবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইউজিসির অনুমোদন ছাড়াই ঢাকাস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়াজো অফিসে নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের ফাউন্ডেশন কোর্স করার নামে সরকারি অর্থের অপচয় করা হচ্ছে। প্রতিবেদনে এ ধরনের অনুমোদনহীন ফাউন্ডেশন কোর্স পরিচালনা বন্ধ করার কথা বলা হয়। প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের সভা ঢাকাস্থ লিয়াজো অফিসে করার ব্যাপারে সমালোচনা করে বলা হয় এতে করে অতিরিক্ত টিএ/ডিএ ব্যায় হচ্ছে।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সর্বাধুনিক সিন্ডিকেট সভা করার জন্য অডিটরিয়াম থাকলেও বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ ঢাকাতেই সিন্ডিকেট সভা করেন এবং সবধরনের কর্মকাণ্ড সেখানেই করা হয়। এতে করে বিমানে করে কর্মকর্তারা ঢাকায় যাতায়াত করেন এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একক বিদ্যুৎ মিটার থাকার সমালোচনা করে বলা হয় আলাদা আলাদা মিটারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ নিলে অনেক টাকা সাশ্রয় করা যেত। সেই সঙ্গে প্রশিক্ষণ ভাতা দুই হাজার টাকা করে গ্রহণ করার ব্যাপারে আপত্তি উত্থাপন করে বলা হয়, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রশিক্ষণ ভাতা নেয়া হচ্ছে না।

প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসনে বসবাসকারী শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিকট থেকে বিধি বহির্ভূতভাবে নির্দিষ্ট হারে বাড়ি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু এতে সরকারি নিয়ম মানা হচ্ছে না। এ খাতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল বাজেটে ২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বরাদ্দ না রাখার বিষয় উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে ১০ জন অধ্যাপকের মধ্যে ৭ জনের দায়িত্ব ভাতা বাবদ ৪ হাজার ২শ’ ৮৬ টাকা হারে, সহকারি অধ্যাপক ১০৩ জনের মধ্যে ৪৭ জন মাসিক ৩ হাজার ১শ’ ৬ টাকা হারে দায়িত্ব ভাতা নিচ্ছেন বলে উল্লেখ করে বলা হয়, দায়িত্ব ভাতা গ্রহণের এ হার অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় অনেক বেশি। তাই এই অর্থ কমানোর কথা বলা হয়। 

এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন কোর্স থেকে আয়ের শতকরা ৪০ ভাগ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয়ের সঙ্গে সমন্বয় করার কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বাজেটারি কন্ট্রোল রেজিস্টার, ক্যাশ বুক ও লেজার সংরক্ষণের বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলা হয়েছে, একই রেজিস্টারে দুই বছরের হিসাব লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। যেকোনো বিলের প্রস্তাব অনুমোদন হওয়ার পূর্বেই বাজেটারি কন্ট্রোল রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করা হয়। তবে বাজেটারি কন্ট্রোল রেজিস্টারের সঙ্গে চূড়ান্ত বিলের কোন মিল পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব দফতরের একাধিক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানিয়েছেন, এখানে কোন নিয়ম-নীতি মানা হয় না। যিনি মূল ব্যক্তি তিনি নিজেই আইন মানেন না, তাহলে চলবে কীভাবে?

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

-এলওয়াই/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,   [ABOUT US]     [CONTACT US]   [AD RATE]   Developed & Maintenance by i2soft