রাজধানীর উত্তরখানে ছুরিকাঘাতে চাঞ্চল্যকর সাকিব (২০) হত্যা ও তার বন্ধু শিপন (১৯) কে গুরুতর আহতের ঘটনায় মূল হোতা শাহীন ওরফে ব্লাক শাহীনসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার সকালে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।
এর আগে সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উত্তরখানের বাটুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত অপর দু'জন হলেন, মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে মিজু ও ফরহাদ হোসেন।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, সোমবার রাতে তাদের গ্রেফতারের পর উত্তরখানের আটিপাড়ার কাঠালতলা থেকে হত্যা কাজে ব্যবহৃত একটি সুইচ গিয়ার ছুরি ও ৩টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
গ্রেফতার মো. শাহিন মিয়া জিজ্ঞাসাবাদের জানায়, ২০১৫ সালে সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন টঙ্গী থেকে এসএসসি পাস করার পর পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। সে দীর্ঘ দিন যাবৎ ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করে আসছে বলে স্বীকার করেছে। পাশাপাশি সে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে উত্তরখান ও দক্ষিণখান থানায় একাধিক ছিনতাই, মারামারি ও মাদক মামলা রয়েছে। তার দেয়া তথ্য মতে, হত্যাকাণ্ডের দিন সে, অপর দুই আসামিসহ জিয়া, তানভীর, রুবেল, মিঠু, সবুজসহ ৭-৮ জন ঘটনাস্থলে ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করছিল। এ সময় ভিকটিমদের দেখে মিঠু ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে সবাইকে নিয়ে তাদের নিকট গিয়ে গায়ে পড়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তারা ভিকটিমদের মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নিতে চাইলে তারা বাধা দেয়।এ সময় দু'পক্ষের হাতাহাতি হলে রুবেল তার নিকটে থাকা একটি সুইচ গিয়ার ছোরা বের করে। শাহিন মিয়া রুবেলের নিকট থেকে ছোড়াটি নিয়ে সাকিব ও শিপনকে উপর্যপুরি আঘাত করে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামি মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে মিজু জানান, সে সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতনে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। সে পেশায় বাইপাইল-সায়েদাবাদ রুটে দোয়েল পরিবহনের হেলপার। এর আগে আশুলিয়া বেড়িবাঁধ এলাকায় ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করত। সে এই চক্রের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে জড়িত ও ইয়াবা সেবনকারী। তার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামি ফরহাদ হোসেন জিজ্ঞাসাবাদে জানান, সে একজন টিউবয়েল মিস্ত্রি। সে এই চক্রের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে জড়িত। সে প্রায় ৫ বছরের বেশি সময় ধরে মাদকাসক্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে ৫টির বেশি মাদক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় বেশ কয়েকবার কারা ভোগ করেছে বলেও সে জানায়। সেই চক্রের সঙ্গে নিয়মিত অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, গ্রেফতারকৃত এই চক্রটি দীর্ঘ দিন যাবৎ সক্রিয় ছিল। তারা ওই এলাকায় ঘুরে ঘুরে লোকজনদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা, মোবাইল, স্বর্ণালংকার ছিনতাই করে আসছিল। এছাড়া চক্রটির বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, অপহরণ, চাঁদাবাজি, ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
-এমআরআর/এমএ