ইতিহাসের সাক্ষী পানাউল্লারচর বধ্যভূমি
Published : Saturday, 13 April, 2019 at 3:15 PM Count : 329
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাক হানাদার বাহিনী ও এদেশীয় রাজাকার আলবদর, আলশামস কর্তৃক দেশের বুদ্ধিজীবী ও নিরীহ মানুষদের পাক দোসররা নির্বিচারে হত্যা করে। পাক হানাদার বাহিনীর মানবতাবিরোধী হত্যাযজ্ঞের সেই স্থানগুলো এখন ইতিহাসের নীরব সাক্ষী।
মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই ১৯৭১ সালের ১৪ এপ্রিল ভৈরবের পানাউল্লারচরে পাক হানাদারবাহিনী বর্বর ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়। ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরবর্তী চন্ডিবের, ভৈরবপুর, জগন্নাথপুর, কালিপুর, গোছামারা, জামালপুর, শিবপুর, কৃষ্টনগর, শম্ভুপুর, গাজিরটেক, কালিকাপ্রসাদ সবকটি গ্রামের ৫ শতাধিক লোককে ধরে নিয়ে পাক হানাদার বাহিনী নির্বিচারে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে।
১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট (শুক্রবার) ভোরে ফজরের নামাজ পড়তে আসা মানিকদী মসজিদে ২২ জন লোককে নিয়ে পাশের বেপারী বাড়ির উঠানে একসঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে পাকা হানাদারবাহিনী বেয়নেট দিয়ে এলোপাথারী খুচিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। মানিকদী মসজিদ আজও ইতিহাসে নীরব সাক্ষী। এদের মধ্য থেকে বেঁচে যাওয়া মানিকদী গ্রামের আ. মান্নান, নূরুল হক ও গোলাপ মিয়া আজও সেই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি বহন করছেন। পাক হানাদারবাহিনী এই তিনজনকেও মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। তবে হানাদারবাহিনীর সেই নিষ্ঠুর বর্বরতায় আব্দুল মান্নান তখন থেকেই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। আর এখনও তিনি এ অবস্থায় বেঁচে আছেন। নূরুল হক ও গোলাপ মিয়ার বুকের বাম পাশে একাধিক বেয়নেটের আঘাত আজ শুধু স্মৃতি। তারা সেই দিনে পাক দোসরদের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর বধ্যভূমিগুলো অরক্ষিত থাকলেও বর্তমান সরকার বধ্যভূমিগুলোতে শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন।
এছাড়াও, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংস্থা বধ্যভূমিগুলো পরিদর্শনের মাধ্যমে শত শত শহীদদের সংখ্যা নিরুপণের উদ্যোগও নিয়েছেন।
-এলআরআর/এমএ