চিকিৎসকের ধর্ষণের শিকার হয়ে নারীর আত্মহত্যা
Published : Sunday, 27 January, 2019 at 8:39 PM Count : 571
নওগাঁয় কর্মস্থলেই এক ডাক্তারের যৌন লালসার শিকার হয়েছেন এক নারী। যৌন নিপিড়নের যন্ত্রনা সইতে না পেরে বিষপানে আত্মহননের পথ বেছে নেন খাতিজা আকতার (৩০)।
খাতিজা মারা যাবার পর তার ফোন রেকর্ড থেকে যৌন নিপিড়নের বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ায় মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ ডাক্তার হেলাল আহম্মেদ লিটনকে গ্রেফতার করেছে। আলোচিত এ ঘটনাটি নওগাঁ শহরের পাটালির মোড় এলাকার।
যৌন নিপিড়নের শিকার খাতিজা শহরতলীর আরজী নওগাঁ মধ্যপাড়ার রাজমিস্ত্রি জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী।
ধর্ষক ডাক্তার হেলাল আহম্মেদের বাড়ি নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার কলা বাড়িয়া শিবপুর গ্রামে।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল হাই ও খাতিজার স্বজনরা জানান, পাঁচ বছর আগে শহরের পাটালীর মোড়ে জনৈক শাহিন হোসেনের বাসার দুটি রুম ভাড়া নিয়ে সেখানে পাইলস্ কিউর সেন্টার খোলেন ডাঃ হেলাল আহম্মেদ (ডিপিএইচ, মেডিশিন/ ডিএমএফ,ঢাকা)। এখানে গত ৩ সপ্তাহ আগে আয়া কাম চেম্বার সহকারী হিসেবে চাকরি নেন এক সন্তানের জননী খাতিজা আকতার। গত ১৮ জানুয়ারি বিকেল পাঁচটার দিকে ডাক্তার হেলাল আহম্মেদ তার চেম্বারের ভিতরে খাতিজা কে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে।
খাতিজার জা আয়েশা সিদ্দিকা জানান, ধর্ষণের শিকার হয়ে প্রাণ চঞ্চল খাতিজা নিরব পাথর হয়ে যান। খাতিজার হঠাৎ করে নিরব হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানার জন্য তার জা অনেক পীড়াপীড়ি করলে সে জানায় ডাক্তার তাকে ধর্ষণ করেছেন। এ লজ্জায় স্বামী, সন্তান বা অন্য কারও দিকে তাকাতে পারছে না সে। একপর্যায়ে সে তার স্বামীর গৃহে গত ২০ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বিষপান করলে প্রথমে নওগাঁ সদর হাসপাতালে এবং পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২২ তারিখ মধ্যরাতে মারা যায় খাতিজা।
খাতিজার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ময়নাতদন্ত শেষে ২২ জানুয়ারি খাতিজাকে দাফনের পর খাতিজার মোবাইল ফোনে ওই ডাক্তার একাধিকবার ফোন করেন। কিন্ত আমি ফোন ধরিনি। কৌতুহল বশতঃ ফোন চেক করতে গিয়ে ফোনে পাওয়া যায় তাকে ধর্ষণের বর্ণনাসহ রেকর্ড। মোবাইল ফোনে খাতিজা বাড়িওয়ালা (যে বাড়িতে ডাক্তারের চেম্বার ওয়েছে) সাহিন হোসেনকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের বিষয়টি বর্ণনা করেন। পরে বিষয়টি নওগাঁ সদর থানায় অবহিত করলে পুলিশ খাতিজার বাবাকে বাদি করে এ বিষয়ে একটি মামলা নিয়ে শুক্রবার ডাক্তার হেলাল আহম্মেদকে গ্রেফতার করে। ওই ডাক্তার আমার ৫ বছর বয়সী নাতনী জামিয়া খাতুনকে মা হারা করেছে। আমি তার উপযুক্ত শাস্তি চাই। একইকথা বলেন, খাতিজার মা সাহানাজ খাতুন।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল হাই বলেন, মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ শুক্রবার ডাঃ হেলাল আহমেদকে তার পাটালীর মোড়ের চেম্বার থেকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে খাতিজাকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন ডাঃ হেলাল আহম্মেদ। খাতিজার স্বজনরা ডাক্তার হেলাল আহম্মেদের শাস্তি দাবি করেছেন।
এইচএস